কলকাতা : কদিন আগেই সৈকতশহর দিঘায় দ্বারোদঘাটন হয়েছে বহুপ্রতীক্ষিত জগন্নাথধামের। আর এবার তিলোত্তমা কলকাতার বুকেও তৈরি হল জগন্নাথ মন্দির।(Kolkata Jagannath Temple)ঐতিহাসিক সোনার কেল্লার পাথর দিয়ে ৬৫ ফুট উঁচু মন্দিরটি নির্মিত হয়েছে। মন্দির নির্মাণের স্থাপত্যবিদ, শিল্পী-মিস্ত্রি ও দক্ষ শ্রমিক সবাই এসেছেন রাজস্থানের জয়সলমের থেকে। অভিনব এই মন্দিরের জগন্নাথদেব মূর্তিও এসেছে শ্রীক্ষেত্র পুরী থেকেই।
Read More: ভারত-পাক সংঘাতের আবহে রাজ্যের সমস্ত থানাগুলিতে নজরদারি চালাবে ভবানী ভবন
শ্রীক্ষেত্র-সংলগ্ন এলাকার নিমকাঠ দিয়ে তৈরি হয়েছে সওয়া চার ফুট উচ্চতার ওই দারুব্রহ্ম। মন্দিরে শুধুই জগন্নাথদেব থাকবেন। পুরীর মতো জগন্নাথদেবের বেদীর নিচে থাকছে বিশাল গুপ্তকক্ষ। দিঘার মতো কলকাতায় এই নয়া জগন্নাথ মন্দিরে(Kolkata Jagannath Temple)পুজো-হোম-যজ্ঞ তথা প্রাণপ্রতিষ্ঠার কাজও করবেন পুরীর মন্দিরের অন্যতম দ্বৈতাপতি রামকৃষ্ণ দাসমহাপাত্র ওরফে রাজেশ দ্বৈতাপতি।
আগামী ১২ মে, সোমবার বুদ্ধপূর্ণিমার পুণ্যলগ্নে শুভ দ্বারোদ্ঘাটনের অপেক্ষায় থাকা নয়া এই জগন্নাথ মন্দির প্রতিষ্ঠার প্রধান উদ্যোক্তা কলকাতার বরো চেয়ারম্যান সুশান্ত ঘোষ।রাজস্থানের জয়সলমের থেকে আসা শিল্পী-মিস্ত্রি ও পাথর খোদাই করা শ্রমিকরা শেষ মুহূর্তের ‘ফিনিশিং টাচ’ দিতে ব্যস্ত। নিত্যদিন মহাপ্রভুর পুজো হবে পুরীর মন্দিরের রীতিতে দক্ষ ও অভিজ্ঞ পুরোহিত দিয়ে। দেবতার ভোগ রান্নার জন্য রয়েছে আলাদা ঘর। রাজেশ দ্বৈতাপতির থাকার ব্যবস্থাও করেছেন বরো চেয়ারম্যান সুশান্ত। কালো পাথরের আটটি কক্ষের বিশাল চক্রের বেদীর উপর বসানো হচ্ছে নিমকাঠে তৈরি জগন্নাথদেবকে।
Link: https://x.com/ekhonkhobor18/status/1921286501687496988?s=19
মন্দির উদ্বোধনে অভিনেতা দেব, শুভশ্রী, শ্রাবন্তী ছাড়াও টলিউড ও বিদ্বজ্জনদের অনেকেই আসবেন বলে জানিয়েছে সূত্র। মন্দিরে শেষ মুহূর্তের কাজে ব্যস্ত জয়সলমেরের শিল্পী-মিস্ত্রিরা শোনালেন, সত্যজিৎ রায় পরিচালিত ‘সোনার কেল্লা’ ছবির দুর্গটি বহু বছর আগে যে পাথরে তৈরি হয়েছিল, সেই একই পাহাড় থেকে পাথর এসেছে আনন্দপুরের মন্দিরে। বছর দেড়েক আগে তিন লরি ভর্তি করে জয়সলমেরের থেকে পাথর এসেছিল আনন্দপুরের জমিতে। তারপর সেখানকার শিল্পী-মিস্ত্রিরা এসেই ধীরে ধীরে গড়ে তুলেছেন ৬৫ ফুট উঁচু মন্দির। মন্দিরের ঠিক সামনে যেমন কালো পিলারে উপর অরুণ দেবতা, তেমনই সিংহদুয়ার দিয়ে ঢুকেই জগন্নাথদেবের ঠিক সামনেই আসীন গরুড়। মাথার উপর বিশালাকার ঝাড়বাতি। নাটমন্দির ধাঁচে মন্দিরের ওখানে দাঁড়িয়েই দেবতার দর্শন হবে। দু’পাশ দিয়েই স্টিলের হাতলের সিঁড়ি। তা দিয়ে বেদীতে উঠে পুরোহিত নিত্য পুজো দেবেন। দেবতাকে কাছ থেকে দর্শন করতে পারবেন বিশিষ্টরা।
পাশাপাশি, সেগুন কাঠের দশ ফুট বাই দশ ফুটের বিশাল দরজার পাল্লা, চূড়ায় পিতলের দীর্ঘ দণ্ড-সহ চক্রের মাথায় উড়বে ধ্বজা। আর এখানেও ধ্বজা পরিবর্তনের জন্য নিচ থেকে উপর পর্যন্ত লোহার বিশাল সিঁড়ি বসানো হয়েছে। তবে জগন্নাথ মন্দির করে থামতে রাজি নন সুশান্ত। এবার তাঁর লক্ষ্য নাটমন্দির ও বৃদ্ধাশ্রম। “পাশের জমির মালিক মন্দিরের জন্য সম্পত্তি দান করেছেন। ওখানে নাটমন্দির, সঙ্গে বৃদ্ধাশ্রম নির্মাণের কাজ শীঘ্রই শুরু হবে”, জানালেন তিনি।