প্রতিবেদন : রাজ্যজুড়ে ব্যাপক হারে আলুর ফলন হয়েছে এবছর। আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে আলু চাষে স্বনির্ভর হতে নতুন পদক্ষেপের পথে হাঁটল রাজ্য। কৃত্রিম উপায়ে ৫০ লক্ষ আলুর চারা(Seedling )তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে তৈরি চারা থেকে উৎপাদিত আলুর গুণমান খুব ভালো হয়। সেগুলি ভাইরাস মুক্ত হয়। কৃত্রিম উপায়ে তৈরি সেই চারা, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে পাঠানো হবে। বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে পাহাড়ি অঞ্চলগুলির উপর। সেখানেও আলু চাষ যাতে ভালো হয়, সেদিকে নজর দিচ্ছে রাজ্য।
Read More: মণিপুরের পর অগ্নিগর্ভ অরুণাচল! ৪৬ বছরের পুরনো আইন ঘিরে জাতিহিংসার আশঙ্কা
জানা গিয়েছে, এপিকাল রুটেড কাটিং পদ্ধতিতে এই চারা (Seedling)তৈরি করা হচ্ছে। মূলত নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগর কৃষি গবেষণাগার এবং মেদিনীপুরের কৃষি গবেষণাগারে এই কাজ হচ্ছে। আগামী বছরগুলোতেও ৫০ লক্ষ করে আলুর চারা তৈরি লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। এই কাজের জন্য প্রতি বছর রাজ্য সরকার ১৮ কোটি টাকা ব্যয় করবে।

এপ্রসঙ্গে প্রোজেক্ট কো র্ডিনেটার সায়ন্তন দে বলেন, “এপিকাল রুটেড কাটিং পদ্ধতিতে আলুর চারা(Seedling )তৈরি করা হচ্ছে। এর ফলে উৎপাদনে গতি এসেছে। বর্তমানে আলু বীজের সিংহভাগটাই অন্য রাজ্য থেকে আসে। তবে আগামী দিনে আমাদের রাজ্য আলু চাষে স্বনির্ভর হওয়ার লক্ষ্যে এগচ্ছে। পাহাড়ী এলাকায় কৃত্রিম উপায়ে আলু চাষে জোর দেওয়া হচ্ছে।”
Link: https://x.com/ekhonkhobor18/status/1899750023208071170?s=19
কৃত্রিম উপায়ে আলু চাষ প্রথমে অ্যারোপনিক্স পদ্ধতিতে শুরু হয়। কিন্তু তাতে আলুর বীজ(Seedling )বেশি পরিমাণে উৎপাদন হলেও, তা সময়সাপেক্ষ। খরচও হয় বেশি। তাই এবার এপিকাল রুটেড কাটিং পদ্ধতিতে আলুর চারা তৈরি করা হচ্ছে। প্রথমে মেদিনীপুর এবং কৃষ্ণনগরের গবেষণাগারে টিস্যু কালচার করে এই পদ্ধতিতে চারা তৈরি করা হয়। তারপর সেই চারা থেকে ২৯টি গ্রিন হাউস ও ৫৫৫টি নেট হাউসে তৈরি করা হচ্ছে একাধিক চারা গাছ। উদ্ভিদবিদ তথা কৃষি-বিশেষজ্ঞ জয়শ্রী মল্লিক জানান, ল্যাবে মাইক্রো প্ল্যান্ট তৈরি করা হচ্ছে। তারপর নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে তা থেকে আরও চারা তৈরি করা হচ্ছে। এই পদ্ধতিতে তৈরি আলুর বীজের গুণমান খুব ভালো হয়।
প্রসঙ্গত, কয়েক মাস আগেই ১৮ লক্ষ আলুর চারা (Seedling)তৈরি করা হয়েছিল। যার মধ্যে ২ লক্ষ চারা দার্জিলিংয়ে পাঠানো হয়। কুফরি হিমালিনী, কুফরি সুখ্যাতি, কুফরি নীলকন্ঠ সহ বিভিন্ন প্রজাতির আলু উৎপাদন করা হচ্ছে। আলু চাষে পাঞ্জাবের উপর নির্ভরশীল বাংলা। প্রায় দেড় লক্ষ মেট্রিক টনের বেশি আলুর বীজ আসে পঞ্জাব থেকে। যা রাজ্যের মোট চাহিদার প্রায় পঞ্চাশ শতাংশের বেশি। কিন্তু সমস্যা হল পাঞ্জাব থেকে আসা আলু বিশুদ্ধ হয় না। জীবাণুযুক্ত আলু হওয়ায় তার গুণগত মান খারাপ হয় বলেই মত কৃষি বিশেষজ্ঞদের। এর ফলে চাষিরা অনেক সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত হন। কিন্তু কৃত্রিম উপায়ে তৈরি হাইটেক আলু বাংলার চাষীদের পক্ষে বিপুল লাভজনক হবে বলে মনে করছেন কৃষি-বিশেষজ্ঞরা।