বাংলাজুড়ে বাড়ছে পেঁয়াজ উৎপাদন। গত বছর রাজ্যে মোট সাড়ে ৬ লক্ষ টনের মতো পেঁয়াজের ফলন হয়েছিল। এবার তা ৭ লক্ষ টন ছাড়িয়ে যাবে বলেই আশাবাদী প্রশাসন। রাজ্যবাসীর আগামী আগস্ট মাস পর্যন্ত যে চাহিদা, তা বাংলার নিজস্ব উৎপাদন দিয়েই পুরোপুরি মেটানো যাবে বলে মনে করছে সরকারি কর্তারা। তাহলে বাজারে দামও নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে। ভিন রাজ্যের, বিশেষ করে মহারাষ্ট্রের ব্যবসায়ীরা ইচ্ছা অনুযায়ী দাম ঠিক করতে পারবেন না। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার বাজেট পেশ করার পর সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্যে সরকারের বিভিন্ন সাফল্যের কথা বলতে গিয়ে পেঁয়াজের প্রসঙ্গ তোলেন। তিনি বলেন, “আগে তো বেশিরভাগ পেঁয়াজই অন্য রাজ্য থেকে আনতে হত। আমরা চাষ বৃদ্ধির উদ্যোগ নিতেই উৎপাদনও অনেক বেড়েছে। রাজ্যে বছরের ৭৫ ভাগ চাহিদা মিটে যাচ্ছে নিজস্ব উৎপাদন থেকেই।” রাজ্যে যে পেঁয়াজ উৎপাদন হয় তার বেশিরভাগই ফেব্রুয়ারি মাস নাগাদ উঠতে শুরু করে। উন্নতমানের বীজ এনে বর্ষাকালীন পেঁয়াজের চাষ বাড়াতে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য।
প্রসঙ্গত, বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য জানান যে অফ সিজন পেঁয়াজ চাষের এলাকা বাড়ানোর জন্য ২২.৫৮ কুইন্টাল বীজ চাষীদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। ৪২৫ টন পেঁয়াজ সংরক্ষণের জন্য চাষীদের আর্থিক অনুদান দিয়েছে সরকার। বাজার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি সংরক্ষণের ব্যবস্থা আরও প্রসারিত হলে সাধারণ ক্রেতাদের আর্থিক সুবিধার পাশাপাশি চাষীরা বেশি আয় করতে পারবেন। সংরক্ষণের ব্যবস্থা বাড়লে আরও বেশিদিন ধরে রাজ্যের পেঁয়াজ বাজারে আসবে। এতে দামের সাশ্রয়ও হবে। কলকাতার পাইকারি বাজারে এখন রাজ্যের নতুন পেঁয়াজ ১৩ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। স্থানীয় উৎপাদন এসে যাওয়ায় মহারাষ্ট্রের ব্যবসায়ীরা এখানে কম দামে পেঁয়াজ পাঠাতে বাধ্য হচ্ছেন। মহারাষ্ট্রের পেঁয়াজ এখন ২০ টাকার আশেপাশে কলকাতার পাইকারি বাজারে আসছে। কিছুদিন আগে তা ছিল কেজিতে ৩০ টাকার বেশি। পুরনো পেঁয়াজ এখনও খুচরো বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকার আশেপাশে।