বাংলার মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেওয়ার পর থেকেই নারী ক্ষমতায়নের উপর বিশেষ জোর দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। করেছেন একাধিক প্রকল্পের সূচনা। রাজ্যজুড়ে ব্যাপকভাবে জনপ্রিয় হয়েছে ‘কন্যাশ্রী’, ‘রূপ্রশ্রী’, ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ প্রভৃতি প্রকল্পগুলি। ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ প্রকল্প সারা দেশের কাছেই হয়ে উঠেছে ‘মডেল’। অন্যান্য রাজ্যগুলিও এর অনুকরণে প্রকল্প চালু করেছে। এবার দিল্লীর সাধারণতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে স্থান পাচ্ছে বাংলার ট্যাবলো। ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ স্থান পাচ্ছে সেই ট্যাবলোয়। গত বছর দিল্লীর সাধারন্তন্ত্র দিবসে কন্যাশ্রী প্রকল্পের উপর রাজ্য সরকারের প্রস্তাবিত ট্যাবলো বাতিল করে দিয়েছিল কেন্দ্র। তা নিয়ে বিতর্কের ঝড় বয়ে গিয়েছিল। কিন্তু এবছর রাজ্যের লোক প্রসার প্রকল্পকে সামনে রেখে রাজ্যের ট্যাবলো পরিকল্পনাকে গ্রহণ করেছে কেন্দ্র। ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’কেও ওই ট্যাবলোতে স্থান দিতে বাধ্য হয়েছে।
উল্লেখ্য, এবার বাংলার ট্যাবলোর সামনেই থাকছে ছৌ নাচের সাজে সিংহবাহিনী দুর্গার মূর্তি। যা নারীশক্তির প্রতীক বলে রাজ্য সরকারের দাবি। এই দুর্গা মূর্তির সামনেই লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের প্রতীক হিসেবে থাকছে বিশালায়তন কলস। যার গায়ে বড় অক্ষরে ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ লেখা থাকবে। রাজ্য সরকারের মতে, এই ভাণ্ডার হল নারী ক্ষমতায়নের প্রতীক। ট্যাবলোর মূল ভাবনা হল মানুষের জীবনে ক্ষমতায়ন ও স্বনির্ভরতা। জঙ্গলমহলের প্রেক্ষাপট ও টেরাকোটা মন্দিরের পশ্চাদপটে ট্যাবলোটিকে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। ছৌ এবং বাউল শিল্পীরা রাজ্যের তরফে কুচকাওয়াজে অংশ নেবেন। পারফরম্যান্সের নিরিখেই বাংলার মডেলকে সম্মতি দিয়েছে কেন্দ্র। ট্যাবলোর গাড়িতে থাকবে একাধিক মডেল। আর কর্তব্যপথে লোকশিল্প প্রদর্শন। হবে বাউল গান ও ছৌ নৃত্য। রাজ্যের এই বিষয় ভাবনা কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সংশ্লিষ্ট নির্বাচক কমিটির অনুমোদন পাওয়ার পরেই রাজ্যের তরফে প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায়। যা এখন শেষ পর্যায়ে। প্রসঙ্গত রাজ্যের ঐতিহ্যপূর্ণ লোকশিল্পের পুনরুজ্জীবনের লক্ষ্যে লোকশিল্পীদের স্বীকৃতি এবং আর্থিক সহায়তা দিতে রাজ্য সরকার লোক প্রসার প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এখনও পর্যন্ত এই প্রকল্পের অধীনে এসেছেন রাজ্যের ১ লক্ষ ৮১ হাজার লোকশিল্পী।