বছরের পর বছর কেটে গেলেও বাংলার প্রতি মোদী সরকারের দুয়োরানিসুলভ আচরণ রয়ে গিয়েছে সেই একইরকম। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বাংলায় বিজেপির ভরাডুবির পর থেকে তা বেড়েছে আরও। বাংলাকে দীর্ঘদিন ধরেই বঞ্চনা করে আসছে কেন্দ্র। মনরেগা প্রকল্পের আওতায় ১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনা-সহ বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পে বাংলার প্রাপ্য ন্যায্য টাকা আটকে রাখা হয়েছে। বঞ্চনার কবল থেকে রেহাই পায়নি উত্তরবঙ্গও। কেন্দ্রের অবহেলাতেই থমকে রয়েছে উত্তর বাংলার সামগ্রিক উন্নয়ন। আজ কালচিনির জনসভা থেকে তা আরও একবার মনে করিয়ে দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর আমলে উত্তরবঙ্গের জন্য রাজ্য কোন খাতে কত টাকা বরাদ্দ করেছে, তার পুঙ্খানুপুঙ্খ পরিসংখ্যানের তথ্য তুলে ধরে উত্তরবঙ্গবাসীকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বার্তা, “উন্নয়নই আমাদের সরকারের প্রধান অগ্রাধিকার। মনে রাখবেন, উত্তরবঙ্গে যে ৫৯ টা চা-বাগান খোলা হয়েছে, সেটাও আমরাই খুলেছি। কেন্দ্র একটাও বন্ধ চা বাগান খোলেনি।” মুখ্যমন্ত্রী জানান, উত্তরবঙ্গের উন্নয়নে রাজ্য ১ লক্ষ ৬৪ হাজার কোটি টাকারও বেশি কাজ করেছে। ১০০ দিনের কাজ এবং আবাসে কেন্দ্রীয় বঞ্চনা সত্ত্বেও দক্ষিণবঙ্গের মতো উত্তরবঙ্গেও রাজ্য সরকারের তরফে বাংলার বাড়ি দেওয়া হচ্ছে। মানুষের কাজের জন্য চালু করা হয়েছে কর্মশ্রী প্রকল্পও।
পাশাপাশি পর্যটনের বিকাশ থেকে শিক্ষার উন্নয়নে একাধিক কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ, পানীয় জলের প্রকল্প-সহ নানাবিধ সরকারি উন্নয়নের খতিয়ান এদিন তুলে ধরেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বহুদিন ধরেই বনাঞ্চলের কিছু এলাকায় জনজাতির জমি দখলের চেষ্টা হচ্ছে। বিষয়টি নজরে এসেছে মুখ্যমন্ত্রীরও। এ ব্যাপারে মমতার কড়া হুঁশিয়ারি, জনজাতির জমি যেন কেউ হাতিয়ে না নিতে পারে। সেটা দেখতে হবে স্থানীয় প্রশাসনকে। আইন মেনেই জনজাতির জমির অধিকার রক্ষা করতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমার কাছে খবর এসেছে জয়গাঁওয়ে নাকি উচ্ছেদের চেষ্টা হচ্ছে। আমি পরিষ্কারভাবে জানিয়ে যাচ্ছি, কাউকে উচ্ছেদ করা আমাদের কাজ নয়। পুনর্বাসন দিতে হবে। এটা আমাদের সরকারের নীতি।” এদিন তরাই ডুয়ার্সের চা বাগানের সরকারি মঞ্চ থেকে বিভিন্ন প্রকল্পে ১০৮ কোটি ৭৩ লক্ষ ৪৫ হাজার কোটি টাকার বিভিন্ন প্রকল্পের সূচনা করে মুখ্যমন্ত্রী। এদিনের অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে ৩০ হাজার উপভোক্তার হাতে সরকারি পরিষেবাও তুলে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
