ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বাংলার প্রতি দুয়োরানিসুলভ আচরণ অব্যাহত রেখেছে মোদী সরকার। বিভিন্ন ক্ষেত্রে উঠেছে কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগ। অতিসম্প্রতিই পেশ করা নতুন কেন্দ্রীয় বাজেটেও ফুটে উঠেছে সেই চিত্র। এবার ই-আদালত নির্মাণের ক্ষেত্রেও প্রকাশ্যে বাংলার প্রতি মোদী সরকারের অবহেলা ও তাচ্ছিল্যর ছবি। মোট ২৮টি রাজ্যের জেলায় জেলায় ই-আদালত তৈরির জন্যে কেন্দ্রীয় সরকার ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের হাইকোর্টকে যে পরিমাণ টাকা দিয়েছিল, সেখানে কলকাতা হাইকোর্ট পেয়েছিল মাত্র ১৬.৭৩ কোটি টাকা! বাংলার চেয়ে বরাদ্দের অঙ্কে প্রায় দ্বিগুণ থেকে ৬ গুণ পর্যন্ত এগিয়ে মূলত বিজেপিশাসিত ‘ডবল ইঞ্জিন’ রাজ্যগুলি। যেমন, এলাহাবাদ হাইকোর্ট (৯৫.৮৭ কোটি), মাদ্রাজ (৯০.৬৯ কোটি), বম্বে (৬৮.৫৪ কোটি), পাটনা (৩২.৩৭ কোটি), কর্ণাটক (৩২. ৩৭ কোটি), গুজরাত (২৭.৭২ কোটি), অন্ধ্র (২৫.৪৪ কোটি), গুয়াহাটি (২৪.৯৭ কোটি), মধ্যপ্রদেশ (২২.৯০ কোটি), তেলেঙ্গানা (২২.০৩ কোটি)।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত অর্থবর্ষের প্রারম্ভিক সময়ে মাদ্রাজ ছাড়া বাকি রাজ্যগুলি ছিল হয় বিজেপিশাসিত, নয় এনডিএ-র শরিক বা সমর্থক। লোকসভায় এক প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অর্জুন মেঘওয়ালের দেওয়া লিখিত উত্তরে এই তথ্য দেওয়া হয়েছে। কীসের ভিত্তিতে এমন বরাদ্দ করা হল, প্রশ্ন উঠেছে আইনজীবী মহলে। কোন হাইকোর্টের অধীনে কতগুলি জেলা আদালত অথবা ওই জেলাগুলিতে কত জনসংখ্যা, সংশ্লিষ্ট জেলা আদালতগুলিতে অমীমাংসিত মামলার সংখ্যাই বা কত? এইসব মানদণ্ড বিচার করা হয়নি বলেই অনেকে মনে করছেন। কারণ, তাহলে এসব মানদণ্ডের নিরিখে কলকাতা হাইকোর্টের চেয়ে গুয়াহাটি, পাটনা, গুজরাত, তেলেঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশের হাইকোর্ট কিছুতেই বেশি বরাদ্দ পেতে পারত না। সুতরাং সব ক্ষেত্রেই যে কেন্দ্রীয় বঞ্চনার শিকার হচ্ছে বাংলা, মন্ত্রীর লিখিত জবাবেই তা আরও একবার স্পষ্ট হয়ে উঠল।