চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনে ভেঙে গিয়েছে বঙ্গ বিজেপির গুমর। নেতারা ৩০-এর টার্গেট বেঁধে দিলেও পদ্মশিবির থেমেছে মাত্র ১২-এ। কমে গিছে ৬টি আসন। আর এর থেকেই দলের অন্দরে ক্রমশ প্রকট হয়ে উঠেছে অন্তর্দ্বন্দ্ব। চলছে দোষারোপের পালা। দিলীপ ঘোষের নেতৃত্বে এই বিজেপিই ১৮টি আসন পেয়েছিল ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে। এরপর তাঁর কাছ থেকে দায়িত্ব কেড়ে সেই ভার দেওয়া হয় শুভেন্দু–সুকান্তর কাঁধে। এরপর থেকেই ভরাডুবি অব্যাহত পদ্মশিবিরে। বুধবার সায়েন্স সিটিতে বিজেপির রাজ্য কমিটির বৈঠকের পর পরাজয়ের দায় নিজের কাঁধ থেকে ঝেড়ে ফেলে দিলেন শুভেন্দু। ভরা মঞ্চে সাফ জানিয়ে দিলেন, তিনি বিজেপির সংগঠনের কোনও দায়িত্বে নেই! তিনি কেবল বিরোধী দলনেতা! যে কথার পরে অনেকে মনে করতে শুরু করেছেন, লোকসভা নির্বাচন এবং সদ্যসমাপ্ত বিধানসভা উপনির্বাচনে বিপুল পরাজয়ের দোষ কৌশলে সুকান্ত মজুমদারের উপর চাপিয়ে দিলেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, “আমি বিরোধী দলনেতা, সংগঠনের দায়িত্ব আমার নয়। সামনে থেকে এখানে চুলচেরা বিশ্লেষণ হবে না। চুলচেরা বিশ্লেষণ হবে, তবে তার জায়গা আলাদা। আমি বিরোধী দলনেতা। আমি অর্গানাইজেশনের দায়িত্বে নেই।”
স্বাভাবিকভাবেই শুভেন্দুর সংগঠনের বিষয়ে এমন মন্তব্যের পর অস্বস্তি বেড়েছে পদ্মশিবিরের। শুরু হয়েছে নানান জল্পনা। রাজনৈতিক কারবারিদের একাংশের মতে, এই মন্তব্যে পরোক্ষে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের দিকে দায় ঠেলা হয়েছে। কারণ রাজ্য সভাপতি হিসেবে সুকান্তই সংগঠনের মূল কাণ্ডারি। নির্বাচনের ফলাফল পর্যালোচনার জন্য বুধবার বিজেপির পক্ষ থেকে সায়েন্স সিটিতে বৈঠকের আয়োজন করা হয়। সেখানে শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদার, দিলীপ ঘোষ, সহ বঙ্গ বিজেপির অন্যান্য উল্লেখযোগ্য নেতারা ছিলেন। সেখানেই বিজেপির পরাজয়ের দায় কৌশলে সুকান্তর দিকে ঠেলে দেন বিরোধী দলনেতা। শুভেন্দুর বক্তব্য, “আমার সংগঠন নিয়ে যা বলার ছিল সেটা দিল্লীতে বলে এসেছি সুনীল বনসলকে। আর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে আমি জানিয়ে এসেছি কেমন করে বাংলাকে বাঁচানো যায়। আমি সংবাদমাধ্যমের সামনে এমন কোনও মন্তব্য করি না, যাতে আমাদের বুথের কর্মী, আমাদের ভোটার হতাশ হন।” তবে এরপর শুভেন্দু পুরো বিষয়টিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। যদিও তাতে মাথাব্যথা একটুও কমেনি দলের উপরমহলের।