চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনে ভেঙে গিয়েছে মোদী-শাহের গুমর। কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছে পদ্মশিবিরের ‘চারশো পার’-এর হুঁশিয়ারি। দেশে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি বিজেপি। ২৪০ ছুঁতেই নাভিশ্বাস উঠেছে তাদের। আর এরপর থেকেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ফের মাথাচাড়া দিয়েছে পদ্ম-পরিবারের অন্দরে। ক্রমশই ঘনীভূত হচ্ছে আভ্যন্তরীণ কোন্দল। এর মধ্যেই প্রকাশ্যে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। লোকসভা নির্বাচনের পর নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহের দল পরিচালনার প্রক্রিয়া নিয়ে বিজেপির অন্দরেই তুমুল আপত্তি এবং অসন্তোষের সূত্রপাত হয়েছে। একের পর এক রাজ্যে হওয়া লোকসভা ভোটের রিভিউ বৈঠকেই ফুটে উঠছে তা। প্রতিটি বৈঠকেই পর্যবেক্ষক হিসেবে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের দু’জন করে প্রতিনিধি থাকছেন। তাঁদের সামনেই রাজ্যের নেতা-কর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরাও ওইসব বৈঠকে স্পষ্ট ভাষায় কথা বলছেন। বাংলায় কর্মিসভায় সুকান্ত মজুমদারের সরব হওয়ার ঘটনাও তারই পরিচয়। রাজস্থান থেকে উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র অথবা গোয়া, সব রাজ্যেই ধরা পড়েছে একই চিত্র। উত্তরপ্রদেশ নিয়ে গেরুয়া শিবিরের শীর্ষ নেতৃত্ব প্রবল দুশ্চিন্তায়। অনেকেই মনে করছেন, এ নাকি বিজেপির শেষের শুরু!
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক রিভিউ বৈঠকে যোগী আদিত্যনাথ অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস এবং অন্তর্ঘাতকে দায়ী করে দিল্লীর দিকেই আঙুল তুলেছেন। আর বিগত ৪৮ ঘণ্টায় তার কড়া জবাব দিচ্ছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এক্ষেত্রে তাদের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করছেন যোগী সরকারেরই উপমুখ্যমন্ত্রী কেশবপ্রসাদ মৌর্য। কর্মিসভায় নিজের সরকারকেই নিশানা করে তিনি বলেছেন, “সংগঠনকে দায়ী করে কোনও রাজনৈতিক লক্ষ্য সিদ্ধ হবে না। দলকে কাছে টানতে হবে। দলের নেতা-কর্মীরা যাতে অপমানিত না হন, সেটা দেখতে হবে।” অর্থাৎ, তিনি যে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকেই ইঙ্গিত করেছেন, তা স্পষ্ট। হিমাচলেও বেআব্রু হয়ে পড়েছে দলীয় মতানৈক্য। মোদী-শাহকে কড়া ভাষায় একহাত নিয়েছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রেম কুমার ধুমল। তাঁর আরও একটি পরিচয়, তিনি বিজেপি সাংসদ অনুরাগ ঠাকুরের বাবা। “হিমাচল প্রদেশের নির্বাচিত কংগ্রেস সরকার ফেলে দেওয়ার জন্য এত তাড়া কীসের? আগে দলের শক্তি ছিলেন কর্মীরা। অটলজি, আদবানিজি সিদ্ধান্ত নিতেন কর্মীদের কথা শুনেই। এখন?”, প্রশ্ন তুলেছেন ধুমল। স্বাভাবিকভাবেই যা মাথাব্যথা বাড়িয়েছে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের।