লোকসভা ভোটে রাজ্যের প্রায় সর্বত্র সবুজ ঝড় দেখা গেলেও পুরুলিয়া লোকসভা কেন্দ্রে জয় অধরাই থেকে গেছে তৃণমূলের। এবার পরাজয়ের কারণ অনুসন্ধানে পুরুলিয়া শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডের মানুষের সঙ্গে কথা বলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। পুরুলিয়ার পুরপ্রধান তৃণমূলের নবেন্দু মাহালি বলেন, ‘শহরে দলের ভরাডুবির কারণ অনুসন্ধান করা হবে। এ ব্যাপারে দলীয় পুরপ্রতিনিধিদের সঙ্গে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে তৃণমূল শহরে ৩টি ওয়ার্ডে এগিয়ে থাকলেও এবার কমে ২টি হয়েছে। শহরের ২৩টি ওয়ার্ডের মধ্যে বাকি ২০টি বিজেপি ও একটিতে কংগ্রেস এগিয়ে। এবার শহরের ১১৩টি বুথের ৯৮টিতে বিজেপি, ১২টিতে তৃণমূল এবং ৩টিতে কংগ্রেস। সার্বিক ভাবে শহরে তৃণমূলের থেকে ২১ হাজারেরও বেশি ভোটে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। ঘটনা হল, ২০১৬-র বিধানসভা, ২০১৯-র লোকসভা কিংবা ২০২১-র বিধানসভা— বারবার এই শহরে এগিয়ে থেকেছে বিজেপি। অথচ পুরভোটে তৃণমূলের একচেটিয়া দাপট থাকছে! কিন্তু এবার নাগরিক স্বাচ্ছন্দ্যে জোর দেওয়ার পরেও এই বিপর্যয় মানতে পারছেন না তৃণমূল নেতৃত্ব।
যদিও সোশ্যাল মিডিয়ায় হারের দায় স্বীকার করেছেন পুরপ্রধান নবেন্দু। তিনি বলেন, ‘পুরসভার কাজে যদি ত্রুটি বিচ্যুতি থাকে, পুরপ্রধান হিসেবে আমাকে তার দায় স্বীকার করতেই হবে। তবে বিভিন্ন জায়গা থেকে যা তথ্য মিলেছে, তাতে এই বিপর্যয় পরিষেবা কেন্দ্রিক নয় বলেই মনে হচ্ছে। পুরবাসীর কাছে কেন্দ্রের ভোট, মোদীর ভোট, ধর্মের ভোট— এই ভাবনা কাজ করেছে।’ তাঁর আক্ষেপ, ‘এত কাজ করেও যদি মানুষ অসন্তুষ্ট হন, তাহলে আমাদের কী করণীয়? বিজেপি যদি কিছু কাজ না করে, মাঠে না নেমে, ধর্মের ভিত্তিতে শুধু রামমন্দির দেখিয়ে বা সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করে বক্তৃতা দিয়ে ভোট পেয়ে যায়, তাহলে পরিষেবার কি কোনও মূল্য নেই?’