সম্প্রতিই বয়ে গিয়েছে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’। তার প্রভাবে বানভাসি আসাম। এবার বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হল। মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫। শনিবার নতুন করে আরও তিন জনের মৃত্যু হয়েছে ওই রাজ্যে। আসাম সরকারের বন্যা সংক্রান্ত বুলেটিনে সে কথা জানানো হয়েছে।
বন্যায় গ্রামের পর গ্রাম ভেসে গিয়েছে। রাজ্য এবং জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে। মানুষের পাশাপাশি ৮৯টি পশুকেও উদ্ধার করা হয়েছে শনিবার। তবে এখনও বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে অসমের গুরুত্বপূর্ণ তিনটি নদীর জল। সেখানে জল না কমলে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলেই অনুমান। শুক্রবার পর্যন্ত বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা ছিল সাড়ে তিন লক্ষ। শনিবার তা ছাড়িয়ে গিয়েছে ছ’লক্ষের অঙ্ক। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নগাওঁ জেলা। শুধু সেখানেই বন্যাকবলিত মানুষের সংখ্যা আড়াই লক্ষের বেশি। আসামের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর পরিসংখ্যান বলছে, রাজ্যের অন্তত ১০টি জেলা এখনও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত।
উল্লেখ্য, আসামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নদী বরাক। গত বৃহস্পতিবার থেকে সেই নদীর জল বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। এ ছাড়া, ব্রহ্মপুত্রের উপনদী কোপিলি, বরাকের শাখানদী কোশিয়ারার জলও বিপদসীমার উপরে রয়েছে। ভেসে গিয়েছে রাস্তাঘাট, সেতু এবং ঘরবাড়ি। বিঘার পর বিঘা কৃষিজমিও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত। শনিবার অসমে নতুন করে যে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে বন্যার কারণে, তাঁরা কছাড়, করিমগঞ্জ এবং হাইলাকাণ্ডী জেলার বাসিন্দা। পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে দিনরাত এক করে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছেন বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যেরা। বহু জায়গার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। প্রভাব পড়েছে ট্রেন চলাচলেও। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সে রাজ্যের পুলিশ এবং জেলা প্রশাসন নির্দেশিকা জারি করে একাধিক বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। রাতে স্থানীয়দের চলাফেরাতেও জারি হয়েছে বিধিনিষেধ। রাজধানী শহর গুয়াহাটির বিস্তীর্ণ এলাকা এখনও জলমগ্ন। রেমালের প্রভাবে গত মঙ্গলবার থেকে বৃষ্টি শুরু হয় আসামে । ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হয় রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে। যার জেরেই বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি।