আপাতত আবহাওয়া খানিকটা স্থিতিশীল। বর্তমানে সাধারণ নিম্নচাপ অক্ষরেখা হিসেবে বাংলাদেশে শ্রীমঙ্গল এলাকায় অবস্থান করা ‘রেমাল’ সম্পূর্ণ শক্তিক্ষয় করবে বুধবার বিকেলের মধ্যেই। চেরাপুঞ্জি এবং আগরতলা হয়ে শিলং এবং শিলচর দিয়ে মণিপুর, মিজোরাম সীমান্তে রাতের মধ্যে তা বিলীন হয়ে যাবে। দক্ষিণবঙ্গে আর তার প্রভাব থাকছে না। উত্তরবঙ্গে যদিও আজ বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকছে। দেশে এবার স্বাভাবিকের থেকে ৬ থেকে ১০ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হবে। বাংলা-সহ পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলি এবার স্বাভাবিকের থেকে ৮ শতাংশ কম বৃষ্টি পাবে। দক্ষিণবঙ্গে পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, দুই মেদিনীপুর এবং দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি এবং কলকাতা এবার স্বাভাবিকের থেকে কিছুটা কম বৃষ্টি পাবে। বাকি দক্ষিণবঙ্গ স্বাভাবিক বৃষ্টি পাবে। উত্তরের দক্ষিণ দিনাজপুর এবং মালদহ জেলা এবার স্বাভাবিকের থেকে কম বৃষ্টি পাবে। বাকি রাজ্য স্বাভাবিক বৃষ্টি পেতে চলেছে ২০২৪ সালের বর্ষাকালে। জুন মাসের ১০ তারিখ নাগাদ বর্ষা আসবে বঙ্গে। কেরলে ১ জুন বর্ষা ঢোকার কথা। মৌসুমী বায়ু প্রবেশের অনুকূল পরিবেশ আছে। রিমালের প্রভাব মৌসুমী বায়ুর ওপর পড়ছে না বলেই আপাতত জানাচ্ছেন আবহবিদরা। জুন মাসে রাজ্যের কোথাও তাপ্রবাহের আগাম পূর্বাভাস নেই। তবে তাপমাত্রা সার্বিকভাবে সারা রাজ্যে স্বাভাবিকের থেকে কিছুটা বেশি থাকবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
পাশাপাশি, রেমালের ছেড়ে যাওয়া প্রচুর জলীয় বাষ্প আপাতত ঘর্মাক্ত অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করবে। প্রচুর বৃষ্টির পরেও বাতাসে অত্যন্ত বেশি পরিমাণ জলীয় বাষ্প থেকে গেছে। ফলে তাপমাত্রা সেই ভাবে না বাড়লেও মঙ্গলবার জলীয় বাষ্প কষ্ট দিয়েছে বঙ্গ বাসীকে। তবে এই অস্বাভাবিক জলীয় বাষ্প ফের বজ্র বিদ্যুৎ সহ বৃষ্টির অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি করতে চলেছে দক্ষিণবঙ্গে। আজ মুর্শিদাবাদ, নদিয়া, উত্তর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় বিক্ষিপ্ত ভাবে বৃষ্টি। ৩০ তারিখ দক্ষিণের সব জেলায় বিক্ষিপ্তভাবে হালকা মাঝারি বৃষ্টি। ৩১ তারিখ দক্ষিণবঙ্গের পশ্চিমের জেলায় বিক্ষিপ্তভাবে হালকা মাঝারি বৃষ্টি হবে। ৩১ তারিখ পশ্চিমের জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর বাঁকুড়া ঝাড়গ্রাম জেলায় অপেক্ষাকৃত বেশি বৃষ্টি হবে। ১লা জুন দক্ষিণবঙ্গের সব জেলায় বজ্র বিদ্যুৎ সহ বৃষ্টির সঙ্গে ৪০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো যাওয়ার পূর্বাভাস। সেদিন অপেক্ষাকৃত বেশি বৃষ্টি হবে দুই মেদিনীপুর, দুই ২৪ পরগনা, বাঁকুড়া এবং দুই বর্ধমান জেলায়। অর্থাৎ এই জেলাগুলিতে সপ্তম দফার নির্বাচন বৃষ্টি বিঘ্নিত হতে পারে। কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়ি জেলায় আজও ভারী বৃষ্টি এবং ঝোড়ো হাওয়ার সতর্কতা রয়েছে। দার্জিলিং এবং কালিম্পং জেলায় হালকা মাঝারি বৃষ্টির সঙ্গে ৩০ কিলোমিটার বেগে দমকা হাওয়া বইবে। ১লা জুন উত্তরের সমতলের সমস্ত জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির সঙ্গে ৫০ কিলোমিটার বেগে দমকা হাওয়ার পূর্বাভাস রয়েছে। ১লা জুন ভোটের দিন কলকাতায় বজ্র বিদ্যুৎ সহ বৃষ্টির সঙ্গে ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে দমকা ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। কলকাতায় গত পরশু দিনের তাপমাত্রা ছিল ২৬.৬ ডিগ্রি। কাল একধাক্কায় প্রায় ৭ ডিগ্রি বেড়ে গিয়ে সেই তাপমাত্রা পৌঁছাল ৩৩ ডিগ্রিতে। একইভাবে গত পরশু রাতের তাপমাত্রা ছিল ২৫.২ ডিগ্রি। কাল রাতে তা প্রায় ৪ ডিগ্রি বেড়ে গিয়ে পৌঁছাল ২৯.৪ ডিগ্রিতে। গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে আর কোনো বৃষ্টি পায়নি মহানগরী। কলকাতার বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ ৯৫ শতাংশ। আকাশ আংশিক মেঘাচ্ছন্ন। দুপুর বা বিকেলের পর খুব হালকা বৃষ্টির ইঙ্গিত দিয়েছে হাওয়া অফিস।