আসামের ১৪ আসনের মধ্যে শুক্রবার দ্বিতীয় দফায় পাঁচ আসনে ভোট হয়েছে। এই পাঁচ আসনের মধ্যে বরাকের তিনটি আসন ২০১৯ সালে করিমগঞ্জ, শিলচর এবং স্বশাসিত পরিষদ বিজেপি পেয়েছিল। এই তিন আসন পাওয়ার সম্ভাবনা এবার প্রায় নেই বলেই কিছুদিন আগে আসামে বিজেপির একাধিক শীর্ষ নেতা মন্তব্য করেছিলেন। আসলে আসামের বরাক উপত্যকার তিন জেলা করিমগঞ্জ, হাইলাকান্দি এবং কাছাড়ে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ সংখ্যাগরিষ্ঠ। আর এই মুসলিম ভোট যাতে বিরোধীদের সুবিধা করে দিতে পারে সেই জন্য বিজেপি কৌশলে একাধিক ট্রেন বাতিল করেছে বলে অভিযোগ উঠছে।
প্রসঙ্গত, গোটা বরাক উপত্যকায় মুসলিম জনসংখ্যা ৫১ শতাংশ। এর মধ্যে করিমগঞ্জে ৬০, হাইলাকান্দিতে ৫৬ এবং কাছাড়ে ৩৭ শতাংশ। এই পরিসংখ্যান ২০১১ সালের জনগণনার হিসাব থেকে পাওয়া। বরাক উপত্যকায় বর্তমানে মুসলমান জনসংখ্যা আরও অনেকটাই বেশি বলে ধারণা করা হয়। আসামের নাগরিক সমাজের একাংশ এবং অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিরোধী দল মুসলমান প্রধান অল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (এআইইউডিএফ) অভিযোগ করেছে, লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় দফায় ভোট দিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মূলত মুসলিম ধর্মালম্বী পরিযায়ী শ্রমিকরা বরাক উপত্যকায় নিজেদের বাড়িতে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন। কিন্তু ভারতীয় রেল একাধিক ট্রেন বাতিল করে তাঁদের আটকানোর চেষ্টা করছে, যাতে তাঁরা ভোট দিতে না পারেন।
অভিযোগ, ‘বিরাট সংখ্যক ভোটার, যাঁরা প্রধানত মুসলিম সম্পরদায়ের, তাঁরা করিমগঞ্জে ভোট দিতে যাচ্ছিলেন। সন্ধ্যার মধ্যে (গতকাল) ছয়টি ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। অন্তত ৫-১০ হাজার মানুষ আর এগোতে পারেন নি। ট্রেন বাতিলের কারণে তাঁরা আর ভোট দিতে পারেননি।’ যেসব ট্রেন বাতিল করা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে—আগরতলা–গুয়াহাটি স্পেশাল, গুয়াহাটি–শিলচর এক্সপ্রেস, শিয়ালদা–আগরতলা–কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস, ফিরোজপুর–আগরতলা এবং কুরলা/মুম্বাই আগরতলা এক্সপ্রেস। শিলচর এবং আগরতলা যাওয়ার আরও সাতটি ট্রেন ‘টার্মিনেট’ বা স্থায়ীভাবে স্থগিত করা হয়েছে। এ ছাড়া দক্ষিণ ভারত থেকে শিলচর ও আগরতলায় যাওয়ার আরও দুটি ট্রেন এবং গুয়াহাটি শিলচর এক্সপ্রেসের সময় পরিবর্তন করা হয়েছে।