ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বাংলার প্রতি দুয়োরানিসুলভ আচরণ অব্যাহত রেখেছে মোদী সরকার। একাধিক বার বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে। আর এবার মোদী সরকারে নীতির জেরে থমকে গেল বাংলায় ইকনমিক করিডরের জন্য জমি অধিগ্রহণ। জানা যাচ্ছে, লোকসভা নির্বাচনের জেরে পুরনো ও চলতি প্রকল্পে বেশি পরিমাণ অর্থের জোগান নিশ্চিত করার সিদ্ধান্ত নেয় মোদী সরকার। পাশাপাশি নয়া প্রকল্পগুলিতে আপাতত অর্থ বরাদ্দ না-করার জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। ফলে, কলকাতা-বারাণসী ও খড়্গপুর-মোড়গ্রাম ইকনমিক করিডরের জমি অধিগ্রহণের টাকা আপাতত স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, বাঁকুড়া, পূর্ব বর্ধমান, হুগলি এবং পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা দিয়ে মোড়গ্রাম-খড়গপুরে ইকনমিক করিডর যাবে। অন্যদিকে, কলকাতা-বারাণসী এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের জন্য দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হওড়া, হুগলি, বাঁকুড়া এবং পুরুলিয়ায় জমির প্রয়োজন। ভারতমালা পরিযোজনার অধীনে এই জোড়া প্রকল্প রয়েছে। মোড়গ্রাম-খড়গপুরের ক্ষেত্রে টাকা আটকে রাখার বিষয়টি জানিয়েছে খোদ কেন্দ্র।
প্রসঙ্গত, খড়গপুর-মোড়গ্রাম করিডরের জন্য জমি অধিগ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশিকা জারির ক্ষেত্রে কাজ এগিয়েছিল অধিকাংশ জেলা। সাধারণত, এমন ধরনের প্রকল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে; প্রথম বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়ার পরই বহু ‘ক্লেমস অ্যান্ড অবজেকশনস’ আসে। এক বছরের মধ্যে সেগুলো নিষ্পত্তি করে, জমি অধিগ্রহণের জন্য জেলাগুলো দ্বিতীয় বিজ্ঞপ্তি জারি করে। মুর্শিদাবাদে দ্বিতীয় বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছিল, টাকা দিয়ে জমি হস্তান্তরের কাজ শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পুরনো প্রকল্পের কাজ শেষ করার লক্ষ্যে টাকা অন্যত্র বরাদ্দ করা হয়েছে। তাই নতুন প্রকল্পের জন্য টাকা ছাড়া স্থগিত রাখা হবে। সংশ্লিষ্ট জেলাগুলিকে ইতিমধ্যেই চিঠি পাঠিয়েছে মোদী সরকার। রাজ্যের এক অধিকারিকের কথায়, প্রকল্প বাতিল হয়নি ঠিকই, কিন্তু কবে টাকা আসবে তার কোনও ঠিক নেই। রাজ্যের অভিযোগ, এহেন ঘটনা ফের প্রমাণ করল, বাংলায় জমির সমস্যা নেই। অর্থাৎ বাংলার ভাবমূর্তি কালিমালিপ্ত করতেই মিথ্যাচার করছে মোদী সরকার। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে রাজ্যের টাকা আটকে দেওয়া হয়। ফলে প্রকল্পের কাজে দেখা দেয় অনিশ্চয়তা। ইতিমধ্যেই এ নিয়ে বিতর্কের ঝড় উঠেছে একাধিক মহলে।