কার্যত দোরগোড়ায় লোকসভা নির্বাচন। শনিবার ঘোষিত হয়েছে নির্ঘণ্ট। ভোট ক্রমশ এগিয়ে এলেও দুশ্চিন্তা পিছু ছাড়ছে বঙ্গ বিজেপির। প্রসঙ্গত, নিঃশর্ত নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ঊনিশের লোকসভা ভোটে মতুয়াদের মন জয় করেছিল পদ্মশিবির। তারপর কেটে গিয়েছে পাঁচ বছর। ক’দিন আগেই কার্যকর হয়েছে সিএএ। কিন্তু আইনের মারপ্যাঁচে হতাশ মতুয়ারা। তাঁদের দাবি, মোদী সরকার প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছে। শান্তি হরি গুরুচাঁদ মতুয়া ফাউন্ডেশন প্রতিবাদ কর্মসূচির ডাক দিয়েছিল। বিজেপির বিরুদ্ধে প্রতিশ্রুতি ভাঙার অভিযোগ এনে, শনিবার দিনভর প্রতিবাদী সাধারণ মানুষ রাস্তায় নামলেন। উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটা ও বনগাঁয় রাস্তা অবরোধ করে, টায়ার জ্বালিয়ে চলল বিক্ষোভ। বিক্ষোভকারীরা ধর্মীয় পতাকা হাতে নিয়ে রাস্তায় নেমেছিলেন। গাইঘাটা থানার সামনে যশোর রোড অবরোধ করে চলে প্রতিবাদ কর্মসূচি। বনগাঁ এক নম্বর রেল গেটের কাছে বিকেলে যশোর রোডে ফের অবরোধ হয়। মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষেরা রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের দাবি, নিঃশর্ত নাগরিকত্ব দিতে হবে। কোনও শর্ত মানবেন না তাঁরা।
এপ্রসঙ্গে শান্তি হরি গুরুচাঁদ ফাউন্ডেশনের কর্ণধার সুমিতা পোদ্দার জানান, তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে নিঃশর্ত নাগরিকত্ব চেয়ে আসছেন। ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি তাঁদের নিঃশর্ত নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছে বিজেপি। নাগরিকত্বের জন্য শর্ত আরোপ করায় মতুয়ারা রীতিমতো দিশাহারা। শুক্রবার ঠাকুরনগরে মমতাবালা ঠাকুরের নেতৃত্বে প্রতিবাদ মিছিল করে মতুয়ারা। খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, নথি আপলোড করতে হবে। নাগরিকত্ব পেতে হলে ইন্টারভিউ দিতে হবে। এই শর্তের কারণেই তাঁরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। বিক্ষোভ থেকেই বনগাঁ লোকসভার বিজেপি প্রার্থী শান্তনু ঠাকুর ও হরিণঘাটার বিধায়ক অসীম সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান ওঠে। মতুয়াদের বক্তব্য, মোদী সরকার তাঁদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। বিজেপির কথায় ভুলে ভোট দিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু বিজেপি সরকার কথা রাখেনি। বাচ্চাদের নিয়ে কোনওক্রমে এক কাপড়ে দেশ ছেড়েছিলেন। নথিপত্র পাবেন কোথা থেকে? এমনই প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা।