দাপটের সঙ্গেই সিরিজের তৃতীয় টেস্টে ইংল্যান্ডকে হারাল ভারত। রাজকোটে চার দিনেই শেষ হয়ে গেল ম্যাচ। দ্বিতীয় ইনিংসে দুরন্ত দ্বিশতরান করলেন তরুণ ব্যাটার যশস্বী জয়সওয়াল। ৫৫৭ রানের বিরাট লক্ষ্য নিয়ে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ১২২ রানে শেষ হয়ে গেল ইংল্যান্ডের ইনিংস। ৪৩৪ রানে ম্যাচ জিতলেন রোহিত শর্মারা। টেস্টের ইতিহাসে এটিই ভারতের সর্বোচ্চ ব্যবধানে জয়। এর আগে নিউ জিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৩৭২ রানে জয় ছিল তাদের রেকর্ড রানে জয়। রাজকোটে জয়ের ফলে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ২-১ এগিয়ে গেল ভারত। চতুর্থ দিন সকালে শুভমন গিলের সঙ্গে ব্যাটিং শুরু করেন কুলদীপ যাদব। নৈশপ্রহরী হিসাবে নেমে ভাল খেলছিলেন কুলদীপ। শুভমনের সঙ্গে দলের রান এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। ধীরে ধীরে নিজের শতরানের দিকে এগোচ্ছিলেন শুভমন। আগের টেস্টেও দ্বিতীয় ইনিংসে শতরান করেছিলেন তিনি। কিন্তু ৯১ রানের মাথায় ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হয়ে গেলেন শুভমন। ২৭ রান করে আউট হন কুলদীপ। পিঠের চোটে তৃতীয় দিন শেষ দিকে রিটায়ার্ট অবসর নিয়ে উঠে গিয়েছিলেন যশস্বী। চতুর্থ দিন শুভমন আউট হওয়ার পরে ব্যাট করতে নামেন তিনি। দেখে মনে হয়নি, পিঠে কোনও সমস্যা হচ্ছে। শুরু থেকেই ছন্দে ছিলেন তিনি। তাঁর সঙ্গে সাবলীল ব্যাটিং শুরু করেন অভিষেককারী ব্যাটার সরফরাজ খান।
এরপর নিজের দ্বিশতরান পূর্ণ করেন যশস্বী। আগে টেস্টেও প্রথম ইনিংসে দ্বিশতরান করেছিলেন তিনি। এই ম্যাচে ১২ ছক্কার বিশ্বরেকর্ড গড়েছেন যশস্বী। টেস্টে এক ইনিংসে এত দিন এই রেকর্ড ছিল ওয়াসিম আক্রমের দখলে। ১৯৯৬ সালে জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে এক ইনিংসে ১২টি ছক্কা মেরেছিলেন তিনি। রাজকোটে ১২টি ছক্কা মেরেছেন যশস্বী। ডিক্লেয়ার না করে দিলে আক্রমকে টপকে একক ভাবে সব থেকে বেশি ছক্কা মারতে পারতেন তিনি। পাশাপাশি, একমাত্র ভারতীয় ব্যাটার হিসাবে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্টে দু’টি দ্বিশতরান করেছেন যশস্বী। তৃতীয় ভারতীয় ব্যাটার হিসাবে পর পর দু’টি দ্বিশতরান করলেন যশস্বী। এই আগে এই রেকর্ড ছিল বিনোদ কাম্বলি ও বিরাট কোহলির দখলে। যশস্বীর পাশাপাশি আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করলেন সরফরাজও। কিন্তু এই ইনিংসেও তাঁর শতরান হল না। ৪ উইকেটে ৪৩০ রানের মাথায় ডিক্লেয়ার করে দেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা। ফলে যশস্বী ২১৪ ও সরফরাজ ৬৮ রানে অপরাজিত থাকেন। ৫৫৭ রানের লক্ষ্যের সামনে ব্যাট করতে নেমে মুখ খুবড়ে পড়ে ইংল্যান্ডের ব্যাটিং। প্রথম ইনিংসের শতরানকারী বেন ডাকেট রান আউট হন। রান পাননি জ্যাক ক্রলি, ওলি পোপ, জো রুট ও জনি বেয়ারস্টো। বেন স্টোকস কিছুটা চেষ্টা করলেও পারেননি। ৫০ রানে ৭ উইকেট পড়ে যায় ইংল্যান্ডের। রবীন্দ্র জাডেজা ও কুলদীপের স্পিন জুটিকে সামলাতে নাস্তানাবুদ হচ্ছিলেন ইংরেজ ব্যাটারেরা। অষ্টম উইকেটে কিছুটা জুটি বাঁধেন বেন ফোকস ও টম হার্টলি। মার্ক উড শেষে বেশ কয়েকটি বড় শট খেলেন। ফলে জিততে কিছুটা বেশি সময় লাগে ভারতের। তাতে অবশ্য জয় আটকায়নি। ম্যাচ জিতেই মাঠ ছাড়ে ভারত। দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতের হয়ে ৫ উইকেট নেন জাদেজা। চমৎকার অলরাউন্ড পারফরম্যান্সের জন্য ম্যাচের সেরাও নির্বাচিত হয়েছেন তিনি।