গত ১৮ই জানুয়ারি শুরু হয়েছে ৪৭তম কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলা। ইতিমধ্যেই বইপ্রেমীদের ঢল নেমেছে প্রাঙ্গণে। আগামী ৩১শে জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে এই বইমেলা। এই মেলার ইতিহাসের কথা আলোচনা করতে গেলে এসে যাবে নানান ঘটনাপুঞ্জ। থাকবে পাবলিশার্স গিল্ড, ময়দান, মিলনমেলা। থাকবে বিভিন্ন প্রকাশনা সংস্থাগুলোও। কিন্তু এই কলকাতা বইমেলার সঙ্গে জড়িয়ে আছে আরও একটি বইমেলার নাম। পশ্চিমবঙ্গ গ্রন্থমেলা। আশির দশকে যে মেলা বইমেলার পাশাপাশিই শুরু হয়েছিল এই শহরে। ১৯৭৬ সালে প্রথম শুরু হয়েছিল কলকাতা বইমেলা। তার ঠিক চার বছর পর, ১৯৮০ সালে বইমেলার আগেই একটি পৃথক মেলার আয়োজন করা হয়। আয়োজনায় ছিল পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য শিক্ষা দফতর। সেই সময় রাজ্যের শিক্ষা মন্ত্রী ছিলেন পার্থ দে। ডিসেম্বরে গ্রন্থাগার দিবসের দিন থেকে ১০-১২ দিন ধরে অনুষ্ঠিত হয় এই মেলা।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, প্রথম ‘পশ্চিমবঙ্গ গ্রন্থমেলা’ শুরু হয় পার্ক সার্কাস ময়দানে। পরে সেটা সরে আসে সেন্ট পলস ক্যাথিড্রালের উল্টোদিকের মাঠে; যা এখন ‘মোহরকুঞ্জ’ নামে পরিচিত। বইমেলার এহেন খুঁটিনাটি যাবতীয় তথ্য এবং ছবি যে সহজে পাওয়া মুশকিল, তা জানেন পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ডের প্রবীণ কর্তারা। তাই এই আন্তর্জাতিক মানের কলকাতা বইমেলার এবার আর্কাইভ তৈরি করতে চলেছে গিল্ড কর্তৃপক্ষ। তৈরি হবে একটি ইতিহাস সমৃদ্ধ লাইব্রেরিও। তাই জমি চেয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আবেদনও জানিয়েছে গিল্ড কর্তৃপক্ষ। গিল্ডের উদ্যোগে ৩৬টি স্টল নিয়ে পথচলা শুরু হয়েছিল কলকাতা বইমেলার। ৪৭তম বইমেলায় এসে সেই স্টলের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক হাজার। একাধিক জায়গা ঘুরে গতবার নিজস্ব ঠিকানা পেয়েছে আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা। সল্টলেক সেন্ট্রাল পার্কের নাম এখন বইমেলা প্রাঙ্গণ। “কলকাতা বইমেলার ইতিহাস যেন হারিয়ে না যায়। তাই ইতিহাস সংরক্ষণ জরুরি। আর্কাইভ হয়ে গেলে, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে সমস্ত তথ্য থেকে যাবে”, জানান পাবলিশার্স অ্যান্ড বুক সেলার্স গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক সুধাংশু শেখর দে।