রাতদিন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বদনাম করে যায় তারা। বিরোধিতা করার সুযোগ খুঁজে বেড়ায়। তাদের আইটি সেলও বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর নামে কুৎসা ছড়াতে কখনও পিছুপা হয় না। কিন্তু কাজের বেলায় সেই মমতাকেই অনুকরণ করতে হয় গেরুয়া শিবিরলে। যোগীরাজ্য উত্তরপ্রদেশের দিকে চাইলেই তার প্রমাণ মিলবে পদে পদে। এর আগেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাংলার উন্নয়নকে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে সংবাদমাধ্যমে তুলে ধরে যোগী রাজ্যের উন্নয়ন বলে চালাতে গিয়ে ধরা পড়েছে বিজেপি। এবার দেখা গেল মমতার প্রকল্পগুলিকে নকল করে সেখানেও বেশ কিছু প্রকল্প চালু করা হয়েছে। বিজেপির এই দ্বিচারিতা যেমন ঘাসফুল শিবিরের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছে, তেমনি মুখ পুড়ছে বঙ্গ বিজেপি নেতাদেরও। তাঁরা যে সামাজিক প্রকল্পগুলি নিয়ে দিনরাত মমতার মুণ্ডপাত করে থাকেন এখন চোখ বন্ধ করে তারই অনুকরণ করছে উত্তরপ্রদেশের ডবল ইঞ্জিন সরকার।
প্রসঙ্গত, উত্তরপ্রদেশের সামাজিক উন্নয়নের জন্য ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে প্রায় ৭ লক্ষ কোটি টাকার বাজেট পেশ করা হয়েছে। যার মধ্যে মোটা টাকা ধরা হয়েছে সামাজিক উন্নয়ন খাতে। বাংলার মমতা সরকারের ধাঁচেই সেই পদক্ষেপ করা হয়েছে বলেই মনে করছেন দেশের রাজনীতিবিদরা। বাংলায় ছাত্রীদের জন্য চালু রয়েছে ‘কন্যাশ্রী’ প্রকল্প। অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া পরিবারের মেয়েদের বিয়ের জন্য রয়েছে ‘রূপশ্রী’ প্রকল্প। মমতার সেই ‘রূপশ্রী’র ধাঁচেই সমাজের সমস্ত শ্রেণির মেয়েদের বিয়েতে অনুদান দিতে বাজেটে ‘সামুহিক বিবাহ’ প্রকল্পে ৬০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে উত্তরপ্রদেশ সরকার। একইসঙ্গে পিছিয়ে পড়া পরিবারের মেয়েদের বিয়ের জন্য বাজেটে আলাদাভাবে ১৫০ কোটির প্রস্তাব রাখা হয়েছে। আবার ‘কন্যাশ্রী’র ধাঁচে চালু করা ‘চিফ মিনিস্টার কন্যা সুমঙ্গলা যোজনা’য় বরাদ্দ করা হয়েছে ১ হাজার ৫০ কোটি টাকা।
এখানেই থেমে যায়নি যোগীরাজ্যের ‘ডবল ইঞ্জিন’ সরকার। অনুসরন বা অনুকরণ হয়েছে অন্য ক্ষেত্রেও। কোভিডের সময় অনলাইনে পড়াশোনায় যাতে কোনওভাবে সমস্যা না হয় তার জন্য মমতা বাংলার পড়ুয়াদের হাতে তুলে দিয়েছেন স্মার্ট ফোন। শুধু তাই নয়, উচ্চ মাধ্যমিকে ভালো রেজাল্ট করা পড়ুয়াদের হাতে ট্যাবও তুলে দিয়েছেন তিনি। এখন তো প্রতিবছরই একাদশ শ্রেণী থেকে কলেজ পড়ুয়াদের হাতে ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পের মাধ্যমে ট্যাব তুলে দেওয়া হচ্ছে। কার্যত মমতার দেখানো সেই পথে হেঁটেই যোগী সরকার যোগ্য ছাত্রছাত্রীদের ট্যাব ও স্মার্ট ফোন দিতে ‘স্বামী বিবেকানন্দ ইয়ুথ এমপাওয়ারমেন্ট স্কিম’ চালু করেছে। বাজেটে সেই প্রকল্পের জন্য ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকাও বরাদ্দ করেছে। আবার কম্পিউটার ল্যাব এর জন্য মাদ্রাসাগুলিকে বাজেটে ১ লক্ষ টাকা করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে যোগী সরকার। পদে পদে মমতাকে অনুসরন করার ঘটনা স্বাভাবিক ভাবেই অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছে বঙ্গ বিজেপি নেতাদের।