মার্কিন শর্ট-সেলার হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের একটি রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতেই প্রবল বিপর্যয়ের কবলে পড়েছে আদানি গোষ্ঠী। শেয়ারগুলিতে নেমেছে বিপুল ধস। আর তাই নিয়েই তোলপাড় দেশের রাজনৈতিক আবহ। আদানি গ্রুপের হাতে থাকা বেশ কিছু সরকারি প্রকল্পের ভবিষ্যত নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। আর তাতে বাদ নেই বাংলাও। বাংলার শিল্পে বড় বিনিয়োগ করার কথা আদানি গোষ্ঠীর। গৌতম আদানি নিজেই এসেছিলেন নবান্নে। দেখা করে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও। নিউ টাউনের ইকো পার্কে গৌতম আদানির ছেলে কিরণ আদানির হাতে তাজপুর বন্দরের কাজ শুরুর অনুমতিপত্র তুলে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাজপুর বন্দরসহ বেশ কিছু বড় প্রকল্পের ভার নেওয়ার কথা গৌতম আদানির। কিন্তু এভাবে আদানি গোষ্ঠীর শেয়ারে পতন ও বিতর্ক চললে, তা আদৌ বাস্তবায়িত হবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার এই নিয়ে প্রশ্ন তোলেন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। একেবারে মমতা-আদানি সাক্ষাত্পর্বের ছবি নিয়ে হাজির হন সাংবাদিকদের সামনে। সেই ছবি দেখিয়ে তিনি বলেন, “আমি কোনও মন্তব্য করব না। সমঝদারো কে লিয়ে ইশারা হি কাফি হ্যায়।” এরপরেই তাজপুর বন্দরের ভবিষ্যত নিয়ে প্রশ্ন তোলেন শুভেন্দু। এবার তাঁরই কথার পাল্টা জবাব দিলেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তিনি বললেন, “আদানির সঙ্গে কি নরেন্দ্র মোদীর ছবি নেই? যাঁরা গেশের প্রথম সারির শিল্পপতি, তাঁদের সঙ্গে যেমন দেশের প্রধানমন্ত্রীর ছবি রয়েছে, তেমনই অন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদেরও ছবি রয়েছে। শিল্পগোষ্ঠীর অভ্যন্তরীণ কোনও বিতর্ক নিয়ে যদি কেউ তাঁর সঙ্গে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর ছবি জড়িয়ে কিছু বলেন, তাহলে তিনি বদ্ধ পাগল ছাড়া আর কিছু নন।”
পাশাপাশি তৃণমূল মুখপাত্র সাফ জানান, রাজ্য সরকার যে প্রকল্পগুলি করবে বলে ঠিক করেছে, কোনও একটি গোষ্ঠীর অভ্যন্তরীণ কোনও গন্ডগোলের জন্য সেই প্রকল্পগুলি কখনও থেমে যাওয়ার মতো অবস্থায় যাবে না। “আদানি গোষ্ঠীকে কেন্দ্র করে একটি বিতর্ক তৈরি হয়েছে। বিপজ্জনক একটি অভিযোগ এসেছে। আদানি গোষ্ঠীও তাদের বক্তব্য রেখেছে। সব মিলিয়ে একটি ডামাডোল চলছে, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু রাজ্যের কিছু প্রকল্প, যেখানে আদানি গোষ্ঠীর কোনও ইনভল্ভমেন্ট রয়েছে, সেখানে এমন চিন্তা করার কোনও কারণ নেই সেই প্রকল্পগুলি অনিশ্চয়তায় পড়ে গেল। একটি গোষ্ঠী এগিয়ে এসেছিল। কিন্তু তার মানে এই নয় অন্য গোষ্ঠী এগিয়ে আসার জন্য অপেক্ষায় নেই। যদি তারা করতে পারেন, ভাল। যদি তারা করতে না পারে বা যদি কোনও জটিলতা তৈরি হয়, তাহলে রাজ্য সরকার বিকল্প পথে যাবে”, স্পষ্ট জানিয়েছেন কুণাল।