গতকাল, অর্থাৎ বুধবার দেশের সাধারণ বাজেট পেশ করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। ইতিমধ্যেই এই বাজেট নিয়ে সূত্রপাত হয়েছে নানান বিতর্কের। মূল্যবৃদ্ধির জেরে ফের ভোগান্তির আশঙ্কায় আমজনতা। পাশাপাশি, সত্যি হল আর একটি জল্পনাও। আগেই মিলেছিল ইঙ্গিত। সেইমতোই জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পে বরাদ্দ কমিয়ে দিল মোদী সরকার। প্রায় ৯০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ কমিয়ে ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষের বাজেট পেশ করলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পে গতবারের সংশোধিত-বরাদ্দ ছিল ২ লক্ষ ৮৭ হাজার ১৯৪ কোটি টাকা। ৮৯ হাজার ৮৪৪ কোটি টাকা কমিয়ে এবার তা নামিয়ে আনা হল ১ লক্ষ ৯৭ হাজার ৩৫০ কোটি টাকায়। উল্লেখ্য, বাংলার মতো যেসব রাজ্য নিজেরাই গণবণ্টন ব্যবস্থায় রেশনে দেওয়ার চাল সংগ্রহ করে, সেসব রাজ্যের ভর্তুকির অঙ্কও কমিয়ে দেওয়া হয়েছে বাজেটে। ডিসেন্ট্রালাইজড প্রোকিওরমেন্ট খাতে আগের বারের তুলনায় ১২ হাজার ৪৮৯ কোটি টাকা কম বরাদ্দ করা হয়েছে এবার। দানাশস্যের ক্ষেত্রে কৃষকদের বাহবা দিয়েই দায় এড়াল মোদী সরকার। ওই খাতে নেই কোনও বরাদ্দ।
পাশাপাশি, কৃষকের কষ্টার্জিত ফসল ফলানোর কৃতিত্বও কেড়ে নিল কেন্দ্র। জোয়ার, বাজার, রাগি, কুট্টু ইত্যাদির মতো দানাশস্যকে নাম দিয়ে দেওয়া হল ‘শ্রীঅন্ন’। চলতি বছর আন্তজার্তিক দানাশস্য বর্ষ হিসেবে পালন করবে গোটা পৃথিবী। গোটা বিশ্বে সবচেয়ে বেশি দানাশস্য উৎপন্ন হয় ভারতে। দানাশস্যের শেষে গোটা বিশ্বে দ্বিতীয় রপ্তানিকারক দেশ হল ভারত। কিন্তু এসবের পরেও কৃষকের ভাগ্যে কোনও প্যাকেজ জুটল না বাজেটে। অন্যদিকে, বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বললেন, হায়দ্রাবাদের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব মিলেট রিসার্চকে সেন্ট্রাল অব এক্সেলেন্সের মান্যতা দেওয়া হবে। চলতি বছরে তেলেঙ্গানায় ভোট। কর্ণাটকেও রয়েছে বিধানসভা নির্বাচন। সেই ভোট মাথায় রেখেই বাজেটে হায়দ্রাবাদের ইনস্টিটিউটকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হল। পাশাপাশি কর্ণাটকের খরা প্রবণ এলাকার সমস্যা মেটানোর জন্যে আপার ভদ্র প্রকল্পে ৫ হাজার ৩০০ কোটি টাকা সাহায্যের ঘোষণা হল বাজেটে। অর্থাৎ, ভোটের রাজনীতিকেই হাতিয়ার করা হল। এমনটাই মনে করছেন রাজনীতির কারবারিরা।