লাল কেল্লায় ঘটা করে নেতাজি মিউজিয়াম তৈরি করেছে মোদী সরকার। তারপর নেতাজির ১২৫তম জন্মবার্ষিকী, ২৩ ও ২৬ জানুয়ারি একযোগে উদযাপন, আন্দামান দ্বীপের পুনর্নামকরণ ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ– দিল্লীর প্রাণকেন্দ্রে নেতাজির বিশাল মূর্তি স্থাপনও হয়েছে। ২১ অক্টোবর আজাদ হিন্দ প্রতিষ্ঠা দিবসও ইদানীং পালন করা হয়। তবে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে বা শিক্ষার জগতে– তা স্কুলই হোক বা গবেষণাভিত্তিক উচ্চশিক্ষাই হোক– এখনও গান্ধী, নেহরু, আম্বেদকর বা মার্কসের ধারেকাছেও সুভাষচর্চা পৌঁছয়নি। ফলে নেতাজি আজও বিপ্লবী যোদ্ধার ভূমিকাতেই বছরে চারদিনের হুজুগ ও রাজনীতির মঞ্চে গরম তর্কে সীমিত থেকে গেছেন। নেতাজি গবেষক চন্দ্রচূড় ঘোষ যেমন মনে করেন, সুভাষচন্দ্রের জীবন ও মনন নিয়ে চর্চা যেমন অকিঞ্চিৎকর, তেমনই তাঁর অন্তর্ধান নিয়ে প্রশ্নগুলোও সরকারিভাবে জিইয়ে রাখা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার চাইলে একমাসের মধ্যে সত্য উদঘাটন করতে পারে।
তাঁর সংযোজন, ‘অনেকেই প্রশ্ন করবেন যে, একমাসের মধ্যে কেমন করে নেতাজির অন্তর্ধান রহস্য ভেদ সম্ভব? আসলে ব্যাপারটা যতটা জটিল ভাবছেন, আদতে তা নয়। প্রয়োজন শুধু সদিচ্ছার। কেন্দ্রীয় সরকার গঠন করুক একটি নিরপেক্ষ, মাল্টিডিসিপ্লিনারি টাস্ক ফোর্স, যা কাজ করবে সুপ্রিম কোর্টের তত্ত্বাবধানে। সংসদে আইন পাস করে নেতাজি-সংক্রান্ত সব নথি ওই টাস্ক ফোর্সকে দেখানো হোক এবং জনসমক্ষে আনা হোক। কোনও সরকারি সংস্থাকেই যেন এর বাইরে রাখা না হয়, তা ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো হোক, র হোক, মিলিটারি ইন্টেলিজেন্স হোক, অথবা হোক রাজ্য সরকারগুলির অধীনে থাকা সিআইডি বা স্পেশাল ব্রাঞ্চ। প্রত্যেক সরকারি কর্মচারী ও উচ্চপদে থাকা বর্তমান ও প্রাক্তন রাজনীতিককে নেতাজি বিষয়ে তাঁদের পদের গোপনীয়তার শপথ থেকে মুক্ত করা হোক। প্রয়োজনীয় ফরেনসিক পরীক্ষা করা হোক নিরপেক্ষ বেসরকারি পরীক্ষাগারে একটি মনিটরিং কমিটির তত্ত্বাবধানে, যাতে কোনও গোলমাল কেউ করতে না পারেন। তারপর দেখুন কতদিন সময় লাগে।’