শিক্ষায় গৈরিকীকরণের অভিযোগ তো ছিলই। পাশাপাশি মোদী সরকারের বিরুদ্ধে ইতিহাস পাল্টে ফেলারও অভিযোগও হামেশাই উঠছে। বিরোধীদের বরাবরের অভিযোগ, মোঘল আমলের ইতিহাস ধীরে ধীরে বদলে ফেলছে মোদী-শাহরা। অন্যদিকে, স্বাধীনতার পরের ইতিহাসকেও ঔপনিবেশিক ষড়যন্ত্রের ফসল বলে প্রচার করছে গেরুয়া শিবির। তাই একে একে বদলানো হচ্ছে সবকিছু। নতুন করে দেশের ইতিহাস লেখার দাবি তুলেছেন অমিত শাহ। বিজেপির অন্যান্য নেতা-মন্ত্রীরাও হাজার হাজার বার জনসমক্ষে ইতিহাস বিকৃত করেছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজেও সেই একই জিনিসের পুনরাবৃত্তি করেই যাচ্ছেন। সোমবার ‘বীর বাল দিবসে’ তিনি বলেন, ইতিহাসের নামে সাধারণ মানুষকে নাকি মনগড়া আখ্যান পড়ানো হয়েছে। মোদীর বক্তব্য, নতুন ভারত ভুল শোধরাতে চায়। এর আগে অহম বীর লাচিত বরফুকনের জন্মজয়ন্তীতে মোদী বলেছিলেন, ঔপনিবেশিক ষড়যন্ত্রের কারণেই দেশের ইতিহাস বিকৃত হয়েছে।
চলতি বছর জানুয়ারিতে মোদী ঘোষণা করেছিলেন, মোঘল সেনার হাতে শিখ ধর্মগুরুর দুই নাবালক সন্তানের ‘শহিদ’ হওয়ার স্মৃতিতে ২৬ ডিসেম্বর পালিত হবে ‘বীর বাল দিবস’। গতকাল সেই মঞ্চে দাঁড়িয়েই নতুন ইতিহাস লিখলেন তিনি। গতকাল মোদী বলেন, ঔরঙ্গজেব এবং তার লোকজনরা গুরু গোবিন্দ সিংয়ের দুই শিশুপুত্রকে তলোয়ারের মুখে ধর্মান্তরিত করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু বীর সাহিবজাদেরা ধর্মান্তরিত হননি। সেই কারণে দুই শিশুকে হত্যা করা হয়। মোঘল সম্রাটের সন্ত্রাস এবং ধর্মীয় গোঁড়ামি নিয়ে সরব হন মোদী। কিন্তু প্রচলিত ইতিহাস বলছে, ধর্মান্তরকরণের চেষ্টায় নয়, গুরু গোবিন্দ সিংহের ছেলেরা যুদ্ধে মারা গিয়েছে। স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসবের সূচনাকালে প্রধানমন্ত্রী দাবি করেছিলেন, ভক্তি আন্দোলন নাকি দেশে স্বাধীনতা আন্দোলনের ভিত প্রস্তুত করেছিল। আদপে এই সব মঞ্চ ব্যবহার করে মোদী নিজেই দেশের ইতিহাসকে বিকৃত করছেন।