আজ, বৃহস্পতিবার এসএসকেএম হাসপাতালে একাধিক পরিষেবার উদ্বোধন করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি বললেন, চিকিৎসা করাতে এসে ভর্তির প্রক্রিয়াতেই যদি সময় চলে যায় তাহলে রোগীর কী হবে? প্রসঙ্গত, বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা অনেক খরচ সাপেক্ষ তাই মানুষ সরকারি হাসপাতালে আসেন। তাই তাদের দিকটা দেখতে হবে বলে জানালেন মমতা। এদিন এসএসকেএমের পেডিয়াট্রিক মেডিসিন বিভাগের সংস্কারের পর তার নতুন করে খুলে দেওয়া হয়। পাশাপাশি এসএসকেএম-এ পূর্বভারতে প্রথম কোনও স্পোটর্স মেডিসিন বিভাগের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। এছাড়াও বাঙুরে বেশকিছু সিটি স্ক্যান মেসিনের উদ্বোধন করা হয়। এর পাশাপাশি, একটি সাততল হোস্টেল ভবন ও দশতলা একটি ক্যান্সার হাব তৈরি করা হচ্ছে এসএসকেএমে। এখানে আধুনিক মানের ক্যান্সারের চিকিৎসা হবে। ওই অনুষ্ঠানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সরকারি হাসপাতালে যারা চিকিৎসা করেন তার প্রাইভেটে যারা চিকিৎসা করেন তাদের মতো আয় করতে পারেন না। তার পরেও সরকারি হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তার ও নার্সদের বেশি ক্রেডিট দিই কারণ কেউ যখন থাকে না তখন তারা রাত জেগে কাজ করেন। রোগীকে পরিষেবা দেন। সিনিয়র ডাক্তারদের আমি অনুরোধ করব, যদি রোটেশন করে রাতে থাকতে পারেন তাহলে ভালো হয়। ট্রমা কেয়ারে গিয়ে দেখে এলাম, খারাপ লাগল। যদি কাজের পদ্ধতিতে ভুল তাকে তাহলে আমাদের তা ঠিক করতে হবে। একজন রোগী সকালে ভর্তি হয়েছে, এখনও প্রসেস চলছে। প্রসেস পরে হবে। আগে তো রোগী চিকিৎসা পাবে! সেই জন্যই তো আমাদের হাসপাতাল।”
পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ট্রমা কেয়ার হাসপাতালটা অনেক কষ্ট করে করা হয়েছে। আপনারা জানেন, একটা ড্রাগ অ্যাডিকটেড ছেলে আজ উল্টোপাল্টা গাড়ি চালিয়ে ৭-৮ জনকে আহত করে ছেড়েছে। তাদের ৩ জন এখানে ভর্তি হয়েছে। ওদের দেখতে গিয়েছিলাম। ওদের ভালো কেয়ার নেওয়া হয়েছে। তবে দু-একজনের সঙ্গে আমরা মনে হল, শুধুমাত্র লিউকো প্লাস্টার লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। একটা ব্যান্ডেজ পর্যন্ত করা যায়নি। দুপুরেও যদি ভর্তি হয়ে তাকে তাহলে প্রসেস চলছে চলবে! অ্যডমিশন হতেই নাকি সময় লাগে, কিন্তু ট্রমা সেন্টার তা হওয়া উচিত নয়। ধরুন একজন গর্ভবতী মহিলা এল। প্রসেস করতেই যদি ৬ ঘণ্টা লাগে তাহলে তো রোগী মরেই যাবে! এগুলো তো ইমার্জেন্সি কেস! পিজিটা হল সেন্টার অব একসেলেন্স।” সোমবারই রাজস্থান গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখান থেকে তিনি যান আজমেঢ় ও পুষ্কর। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “পুষ্করে গিয়েছিলাম। ওখানে একজন ডাক্তারের সঙ্গে পরিচয় হল। উনি আগে ছিলেন কলকাতায়। তারপর দুর্গাপুর মিশন হাসপাতালে। তিনি চলে গিয়েছেন। তাই ডাক্তার পাওয়া খুব একটা সহজ নয়। রাজ্যে একসময় ১১টা মেডিক্যাল কলেজ ছিল। বেসরকারি মিলিয়ে এখন এখন সেটা ৩৩ হয়েছে। বেসরকারিতে চিকিৎসা খুবই খরচ সাপেক্ষ। তাই মানুষ সরকারি হাসপাতালে চলে আসে।” ডাক্তারের সংখ্যা বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন মমতা। যেখানে ডাক্তারের অভাব রয়েছে সেখান বেশি করে নার্স নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।