নতুন মোড় এল বাবরি মসজিদ ধ্বংসের কাণ্ডে। এবার এই ঘটনায় অভিযুক্ত ৩২ জনকে শাস্তি দেওয়ার দাবি নিয়ে এবার সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল ইন্ডিয়া মুসলিম পারসোনাল বোর্ড। ১৯৯২ সালের ৬ই ডিসেম্বর অযোধ্যায় সাড়ে পাঁচশো বছরের পুরনো ওই মজজিদ ভাঙার ঘটনায় সিবিআইয়ের চার্জশিটে নাম থাকা ৩২ জনকে লখনউের স্থানীয় আদালত নির্দোষ ঘোষণা করেছে। অভিযুক্ত ৩২ জনের মধ্যে নাম ছিল বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আদবানি, মুরুলি মনোহর যোশী, উমা ভারতী, প্রয়াত শিবসেনা নেতা বাল ঠাকরে, তাঁর পুত্র উদ্ধবের। এছাড়া, বিশ্ব হিন্দু পরিষদের একাধিক নেতার নাম আছে তালিকায়। বুধবার লখনউতে এআইএমপিএলবি-র এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, এলাহাবাদ হাইকোর্ট তাদের আর্জি খারিজ করে দেওয়ায় তারা সর্বোচ্চ আদালতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। লখনউয়ের সিবিআই আদালত ২০২০-র ৩০শে সেপ্টেম্বর অভিযুক্ত ৩২ জনকেই নির্দোষ ঘোষণা করে প্রমাণের অভাবে। আদালতের বক্তব্য, সিবিআই এমন কোনও তথ্য, নথি পেশ করতে পারেনি যা থেকে বলা যায়, অভিযুক্তরা মসজিদ ভাঙার কাজে হাত লাগিয়েছিলেন বা ষড়যন্ত্রের অংশীদার ছিলেন।
এরপর উক্ত রায়ের বিরুদ্ধে মুসলিম পারসোনাল ল বোর্ডের তরফে হাইকোর্টের দুই বিচারপতির বেঞ্চের কাছে সিবিআই আদালতের রায়ের বিরোধিতা করে মামলা করা হয়েছিল। গত ৯ই নভেম্বর রিভিশন পিটিশন প্রত্যাখ্যান করে হাইকোর্ট বলেছে, যেহেতু মামলাকারীরা নিম্ন আদালতের রায়ের কারণে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্থ নন, তাই তাঁদের রায় চ্যালেঞ্জ করার অধিকার নেই। বোর্ডের কার্যনির্বাহী সদস্য এবং মুখপাত্র সৈয়দ কাসিল রসুল ইলিয়াস বলেছেন, বোর্ড এখন নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাঁর বক্তব্য, অযোধ্যার মূল মামলা অর্থাৎ বিতর্কিত জমির অধিকার বিবাদের নিষ্পত্তি করে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বলা হয়েছে, “বাবরি মসজিদ ধ্বংস করা একটি অপরাধমূলক কাজ ছিল।” প্রসঙ্গত, ২০১৯-এর ৯ই নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ তাদের ঐতিহাসিক মামলায় বিতর্কিত জমিকে রামের জন্মস্থান বলে উল্লেখ করেছে। সেই সঙ্গে সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে বলা হয় যে, “বাবরি মসজিদ ধ্বংস আইনের শাসনের গুরুতর লঙ্ঘন। তারপরও অভিযুক্তরা আইনের নাগালের বাইরে রয়েছে।” এ নিয়ে প্রবল শোরগোল উঠেছিল দেশের রাজনীতিতে।