কেটে গেছে ছ-ছটি বছর। তবুও সেই তিমিরেই ভারতীয় অর্থনীতি। মোদী সরকারের নোটবন্দির সিদ্ধান্ত কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছে। নোট বাতিল নিয়ে তরজা অব্যাহত শীর্ষ আদালতে। বিগত শুনানিতে কেন্দ্র জানিয়েছিল, নোট বাতিল শুধু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির একার সিদ্ধান্ত নয়। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সঙ্গে সবিস্তারে আলোচনার পরই ৬ বছর আগের ওই বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সরকার। যদিও এদিন ফের একাধিক অস্বস্তিকর প্রশ্নের মুখে পড়েন অ্যাটর্নি জেনারলে ভেঙ্কটরমানি। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক নোট বাতিলের সিদ্ধান্তে না করলে দেশের শীর্ষ ব্যাংকের পরামর্শ উপেক্ষা করেই কি সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হত? এমনই প্রশ্ন করেছে আদালত। নোটবন্দির পর মানুষের কষ্ট, ব্যাংক এবং এটিএমের লাইনে দিনের পর দিন দাঁড়িয়ে থাকা, এমনকী লাইনে দাঁড়িয়ে শতাধিক মানুষের মৃত্যুর অভিযোগ, নগদের অভাবে ব্যবসা বন্ধ, রুজিতে টান, ব্যাংকে এবং স্বল্প সঞ্চয়ে সুদের হার কমা, এত কিছুর পরে কতটা লাভবান হয়েছে ভারতের অর্থনীতি? এই প্রশ্নই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে পিটিশনে তোলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এত বড় সিদ্ধান্ত সংসদীয় আইনের মাধ্যমে কার্যকর না করে আচমকা বিজ্ঞাপ্তি জারি করা হল কেন? উঠছে এমনই প্রশ্ন। বিচারপতিরা বলেন, ধরা যাক আরবিআই একমত হয়নি নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের সঙ্গে তাহলে কি আরবিআইকে উপেক্ষা করে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হত? উত্তরে কেন্দ্রের অ্যাটর্নি জেনারেল ভেঙ্কটরমানি বলেন, এই প্রশ্ন উঠছে না। কারণ তেমন কিছুই ঘটেনি। তবে আইনত কেন্দ্রের সেই ক্ষমতা রয়েছে যার প্রয়োগে কোনও সিদ্ধান্ত একক ভাবে কার্যকর করতে পারে। ২০১৬ সালে আচমকা ৫০০ এবং ১০০০ টাকার নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ওই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মামলা হয় সুপ্রিম কোর্টে। গত সেপ্টেম্বরে এই সংক্রান্ত শুনানিতে রাজি হয় আদালত। ১২ই অক্টোবরে হয় প্রাথমিক শুনানি। ওই দিন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ জানায়, এই বিষয়ে জবাবদিহি করা কেন্দ্রের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। নোট বাতিলের সিদ্ধান্তে দেশের আমজনতার আদৌ লাভ হয়েছে কি না, এই বিষয়ে ৯ই নভেম্বরের মধ্যে হলফনামা মারফত জানাতে হবে মোদী সরকারকে। এমনই নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালতের বিচারপতিদের বেঞ্চ।