বুধবার তামিলনাড়ু সফরে গিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর পৌঁছেই সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা ডিএমকে প্রধান এম কে স্ট্যালিনের সঙ্গে বৈঠক সারলেন তিনি। বুধবার সন্ধ্যায় চেন্নাইয়ে স্ট্যালিনের বাড়িতে তাঁদের বৈঠক হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন, স্ট্যালিনের বোন, সাংসদ কানিমোজি, ছেলে উদয়নিধি এবং ডিএমকে নেতা টিআর বালু। বৈঠকের পরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন দুই মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বলেন, ‘‘আমি চেন্নাই এসেছি বাংলার রাজ্যপালের বাড়িতে এক পারিবারিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে। স্ট্যালিনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করলাম। ও আমার ভাইয়ের মতো। চেন্নাইয়ে এসে ওর সঙ্গে দেখা করব না, তা কি হয়! এখানের চা খুব বিখ্যাত। দু’জনে চা খেলাম।’’ প্রশ্ন ওঠে, আগামী লোকসভা ভোটে বিরোধী ঐক্যের জল্পনার আবহে এই সাক্ষাৎ কি কেবলই সৌজন্যের? এ প্রসঙ্গে মমতা বলেন, ‘‘দু’জন রাজনীতির মানুষের দেখা হলে রাজনীতির কথা তো হবেই। উন্নয়নের কথাও হল।’’
উল্লেখ্য, বাংলার ভারপ্রাপ্ত রাজ্যপাল তথা তামিলনাড়ুর প্রাক্তন বিজেপি নেতা লা গণেশনের একটি পারিবারিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বুধবার বিকেলে চেন্নাই পৌঁছন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যাওয়ায় আগে স্ট্যালিনের সঙ্গে দেখা করার কথা জানিয়ে মমতা বলেন, ‘‘আমার রাজনৈতিক বন্ধু এবং বিরোধী ঐক্যের সঙ্গী।’’ এর পরেই জাতীয় স্তরে বিজেপি বিরোধী জোট গঠনের বিষয়ে দুই নেতার আলোচনার সম্ভাবনা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে ডিএমকে নেতা স্ট্যালিনই প্রথম প্রকাশ্যে রাহুল গান্ধীকে ইউপিএ জোটের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসাবে তুলে ধরার পক্ষে সওয়াল করেছিলেন। ওই নির্বাচনে সারা দেশে ঝড় তুললেও তামিলনাড়ুতে একেবারেই দাঁত ফোটাতে পারেনি বিজেপি। সে রাজ্যের ৩৯টি লোকসভা আসনের মধ্যে ডিএমকে একাই জিতেছিল ২৩টিতে। কংগ্রেস, সিপিএম, সিপিআই-এর মতো সহযোগীদের নিয়ে মোট ৩৮টিতে। বিজেপি একটিও আসনে জিততে পারেনি। তাদের সহযোগী এডিএমকের ঝুলিতে গিয়েছিল মাত্র ১টি লোকসভা কেন্দ্র। ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি-বিরোধিতার প্রশ্নে কংগ্রেস, সিপিএম এবং তৃণমূলকে এক অক্ষে বেঁধে এগোতে চাইছে ডিএমকে। গত বছরের আগস্টে চেন্নাইয়ে এম করুণানিধির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত কর্মসূচীতে যোগ দিতে গিয়ে স্ট্যালিনের পাশে বসেই মমতা জানিয়েছিলেন, আগামী দিনে বিজেপি-বিরোধিতার পথ কথা বলে ঠিক করবেন তাঁরা। এ বার দুই নেতার বৈঠকের পর ফের সে নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।