একুশের ভোটে ভরাডুবির পর থেকেই বঙ্গ বিজেপির অন্দরে মুষল পর্ব চলছে! সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ থেকে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ত্যাগ— নানা ভাবে দলের একাংশের বিরুদ্ধে সরব হতে দেখা গিয়েছে দলেরই অন্য অংশকে। একের পর এক পুরভোট, উপনির্বাচনে হারের পর সেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আরও বড় চেহারা নিয়েছে। এবার দলের সাংগঠনিক জোন ও সেই জোনের অন্তর্গত বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের নাম ঘোষণা হতেই নতুন করে বিদ্রোহের আগুন বঙ্গ বিজেপিতে। অভিযোগ, দিলীপ ঘনিষ্ঠদের ব্রাত্য করে রাখা হয়েছে। বাদ পড়েছেন সাংসদ জগন্নাথ সরকার, প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজকমল পাঠক, রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো পুরনো নেতারা। বদলে গুরুত্বপূর্ণ এই পদ পেয়েছেন সজল ঘোষ, লকেট চট্টোপাধ্যায়রা।
প্রসঙ্গত, বিজেপির কলকাতা জোনের ইনচার্জ ও আহ্বায়ক করা হয়েছে যথাক্রমে অগ্নিমিত্রা পল ও জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়। কলকাতা বিভাগের দায়িত্ব দীপাঞ্জন গুহর সঙ্গে দেওয়া হয়েছে সজল ঘোষকে। রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরিয়ে সেখানে সজলকে আনা হয়েছে। এবারও কোনও জায়গা পাননি দিলীপ-ঘনিষ্ঠ আর এক নেতা সায়ন্তন বসু। সোমবারই দলের মহিলা মোর্চার ইনচার্জ করা হয়েছিল লকেট চট্টোপাধ্যায়কে। এর পাশাপাশি রাঢ়বঙ্গ জোনের ইনচার্জের দায়িত্বও তাঁকে দিয়েছে দল। এদিকে গুরুত্ব বেড়েছে দুই বিধায়ক দীপক বর্মন ও বিমান ঘোষের। উত্তরবঙ্গ জোনের আহ্বায়ক হয়েছেন দীপক। হুগলি বিভাগের আহ্বায়ক হয়েছেন বিমান।
এদিকে নতুন কোর কমিটি ও জোন-বিভাগের দায়িত্ব বন্টন পর্ব ঘোষণা হতেই ফের বঙ্গ বিজেপিতে কোন্দল চরমে। ক্ষোভ দানা বেঁধেছে একাধিক শীর্ষ নেতাদের মধ্যে। ঘোষিত বিভিন্ন কমিটিতে ব্রাত্য থাকায় দলের অভ্যন্তরে একাধিক নেতা ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। কোর কমিটিতে জায়গা না পেয়ে সাংসদ সৌমিত্র খাঁ রাঢ় বঙ্গ জোনের দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেছেন। দলের একাংশ প্রশ্ন তুলেছে, রাজ্য কমিটির সহ-সভাপতি সাংসদ জগন্নাথ সরকারকে কেন ব্রাত্য রাখা হচ্ছে? কোর কমিটি তো বটেই কোনও জোন-বিভাগের দায়িত্ব দেওয়া হয়নি তাঁকে। অথচ, তাঁর লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে প্রতিটা বিধানসভাই বিজেপি দখলে রেখেছে। সেই জয়ে জগন্নাথবাবুর বড় ভূমিকা ছিল।