দেশের প্রধানমন্ত্রী পদে বসার পর থেকেই প্রতিশ্রুতির বন্যা বইয়ে দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেগুলি মিথ্যা হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। এবার ফের তা প্রকাশ্যে এল। দূরপাল্লার ট্রেনের গতি লম্বাচওড়া প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে মোদী সরকার ও রেল মন্ত্রক। কিন্তু বাস্তব ছবিটা একেবারেই বিপরীত। পূর্বরেলের তথ্য তেমনই বলছে। রেলের গতি নিয়েও মিথ্যাচার করেছেন মোদী, এমনটাই অভিযোগ যাত্রীদের। ট্রেনের গতিবেগ সংক্রান্ত কোনও তথ্য এখনও পর্যন্ত তাদের কাছে নেই, স্পষ্টভাবে এমনই জানিয়েছেন পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক একলব্য চক্রবর্তী। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে পূর্ব রেলের অধীনস্থ ছোট মেল ও এক্সপ্রেস ট্রেনের গড় গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৪৮. ৮২ কিলোমিটার। গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে, মেল ও এক্সেপ্রেস ট্রেনের গড় গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৫২.১৫ কিলোমিটার অর্থাৎ এক বছরে চার কিলোমিটার গতিবেগ হ্রাস পেয়েছে।
পাশাপাশি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি বছর সেপ্টেম্বরে পূর্ব রেলওয়ের ৬ হাজার ৪২৫টি ট্রেন মোট ৩০ লক্ষ ৯৭ হাজার ৪৭৯.২২ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করেছে। তাতে মোট ৩৮ লক্ষ ৬ হাজার ৫৭৮ মিনিট সময় লেগেছে। ঘণ্টায় গড়ে ৫০ কিলোমিটার বেগেও কোনও ট্রেন চলতে পারেনি। অথচ গত বছর এই একই সময়ের মধ্যে পূর্ব রেলের ৫ হাজার ১১৭টি ট্রেন চলেছিল। ট্রেনগুলি ২৪ লক্ষ ৩০ হাজার ৮১০ কিলোমিটার যাত্রাপথ অতিক্রম করেছিল ২৭ লক্ষ ৯৬ হাজার ৫৭৪ মিনিটে। মেল ও এক্সেপ্রেস ট্রেনগুলি গড়ে ঘণ্টায় ৫২.১৫ কিলোমিটার গতিতে চলেছিল। অথচ রেলমন্ত্রকের ফেসবুক থেকে ট্যুইটার, সব সোশ্যাল মিডিয়ার হ্যান্ডেলজুড়ে সর্বত্রই কেবল গতিশক্তি নিয়ে গালভরা প্রচার করা হয়। কখনও রেলমন্ত্রীর ঝড়ের গতিতে ট্রেন চালানোর ভিডিও পোস্ট করা হচ্ছে, সেমি হাইস্পিড ট্রেনের গল্প শোনানো হচ্ছে, আবার কখনও মেল ও এক্সপ্রেস ট্রেনের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার থেকে বাড়িয়ে ১৩০ কিলোমিটার করা হয়েছে বলেও প্রচার করা হচ্ছে। এদিকে সে গুড়ে বালি! স্বাভাবিকভাবেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। তুঙ্গে নিন্দার ঝড়।