অনন্য আলোর পোশাকে সেজে উঠতে চলেছে ঐতিহ্যবাহী হাওড়া ব্রিজ। সিডনির অপেরার আদলে ঝলমল করবে এই সেতু। সন্ধে হলেই শুরু হবে লাইট অ্যান্ড সাউন্ড শো। সঙ্গে ‘অদৃশ্য স্ক্রিনে’ ফুটে উঠবে কলকাতার ইতিহাস। কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে কেন্দ্রীয় তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রক। খরচ হবে ৩৫ কোটি টাকা। বিগত ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে, শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি বন্দরের ১৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে হাওড়া সেতুতে নতুন আলোকসজ্জা করা হয়েছিল। যে আলোকসজ্জা বিভিন্ন উৎসবের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে এখনও। “গত আড়াই বছর হাওড়া সেতুতে চালু হওয়া সেই আলোকসজ্জায় ৬৫০টি এলইডি আলোর পয়েন্ট রয়েছে। নতুন প্রযুক্তি এক কোটি ৬০ লক্ষ রং-মিশ্রণে যা জ্বলে উঠতে সক্ষম। এবং এক সেকেন্ডেরও কম সময়ে রং বদল করতে পারে। সেই সঙ্গে বর্তমান আলো পরিবেশবান্ধব, তার রক্ষণাবেক্ষণের খরচও কম। যে আন্তর্জাতিক সংস্থা হাওড়া সেতুতে বর্তমান আলোর পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করেছে, তারা আমেরিকার টেক্সাসের ‘কর্পাস ক্রিস্টি হার্বার ব্রিজ’, সান ফ্রান্সিসকোর ‘অকল্যান্ড বে ব্রিজ’-সহ বিশ্বের একাধিক জায়গায় আলোর প্রকল্প রূপায়ণ করেছে”, জানিয়েছেন বন্দরের হেরিটেজ পরামর্শদাতা গৌতম চক্রবর্তী।
পাশাপাশি, বন্দরের ইতিহাস অনুযায়ী ২০০৬ সালে প্রথম বারের জন্য সোডিয়াম ভেপার আলোয় সেজে উঠেছিল হাওড়া সেতু। পাল্টে গিয়েছিল রাতের কলকাতা। সেই আলোর কারসাজির নেপথ্যে ছিলেন ‘আলোর জাদুকর’, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আলোকসম্পাতশিল্পী তাপস সেন।তাপসবাবু মারা গিয়েছিলেন ২০০৬ সালেই। তাঁর ছেলে জয় মারা যান তার আট বছর পরে, ২০১৪ সালে। তিনিও হাওড়া সেতুর আলো নিয়ে আধুনিকতার কাজ করেছেন। নয়া পরিকল্পনায় স্বাধীনতা দিবস বা প্রজাতন্ত্র দিবসের মতো বিশেষ দিনে নয়, প্রতিদিনই সন্ধ্যার পর লাইট অ্যান্ড সাউন্ড শো হবে হাওড়া ব্রিজে। ব্রিজের ঠিক মাঝে এমনভাবে এলইডি স্ক্রিন বসানো হবে, যাতে দিনের বেলা বিশেষ বোঝা না যায়। ফলে দিনে এই স্ক্রিনের কারণে হাওড়া ব্রিজের বাহ্যিক অবস্থার কোনো পরিবর্তন ঘটবে না। সন্ধ্যার পর এই ‘অদৃশ্য স্ক্রিনে’ লাইট অ্যান্ড সাউন্ড শো-এ কলকাতার ইতিহাস ও আবহমান রূপকথার স্বাদ পাবেন শহরবাসী।