তাৎপর্যপূর্ণ রায় দিল শীর্ষ আদালত। স্পষ্ট জানিয়ে দিল, স্ত্রী-সন্তানদের ভরণ-পোষণের জন্য দরকার পড়লে মুটে মজদুরদের মতো কায়িক শ্রম করতে হবে সংসারের কর্তাকে। সম্প্রতি একটি মামলায় রায় দিতে গিয়ে পর্যবেক্ষণে এমনই রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। স্ত্রী আলাদা থাকলেও তাঁকে আর্থিক ভাবে সাহায্য করা স্বামীর কর্তব্যের মধ্যেই পড়ে বলে মনে করে আদালত। ফলত দরকার হলে কায়িক পরিশ্রম করে তাঁকে টাকা উপার্জন করতে হবে বলেও জানিয়েছে দেশের শীর্ষ আদালত। ব্যবসা বন্ধ ফলে স্ত্রী, সন্তানদের ভরণ-পোষণের টাকা দিতে পারছেন না বলে আদালতে জানান এক ব্যক্তি। সেই মামলাতেই সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি দীনেশ মাহেশ্বরী এবং বিচারপতি বেলা এম ত্রিবেদীর বেঞ্চ এই মন্তব্য করে। ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২৫ নম্বর ধারা উল্লেখ করে বিচারপতিরা বলেন, স্ত্রী এবং শিশুদের রক্ষা করতে সামাজিক ন্যায় বিচারের জন্যই আইন তৈরি হয়েছিল। ব্যবসা বন্ধ বলে স্ত্রী-সন্তানের ভরণ-পোষণ না করতে চাওয়া ওই ব্যক্তির আবেদন খারিজ করে দেয় শীর্ষ আদালত। বিচারপতিরা বলেন, আবেদনকারী একজন সক্ষম ব্যক্তি। বৈধ উপায়ে উপার্জন করে স্ত্রী- নবালক সন্তানের ভরণপোষণ করতে বাধ্য তিনি।
প্রসঙ্গত, এদিন রায় দিতে গিয়ে বিচারপতিরা বলেন, মামলা চলাকালীন দাখিল করা একাধিক তথ্যের ভিত্তিতে আদালত নিশ্চিত যে ওই ব্যক্তি সুস্থ এবং সক্ষম। ফলে, রোজগার করার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে তাঁর। ওই ব্যক্তিকে স্ত্রীর ভরণ-পোষণের জন্য প্রতিমাসে ১০ হাজার টাকা এবং নাবালক ছেলের জন্য মাসে ছয় হাজার টাকা করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। স্বামীর কাছে ভরণ-পোষণের দাবি তুলে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বিচ্ছিন্ন স্ত্রী। এর আগে মহিলার আবেদন খারিজ করে দেয় ফ্যামিলি কোর্ট। যা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। পঞ্জাব-হরিয়ানা হাইকোর্ট ঘুরে শেষ পর্যন্ত এই মামলা পৌঁছয় শীর্ষ আদালতে। আদালতে স্ত্রী জানান, ২০১০ সালে শ্বশুরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য হন তিনি। তাঁর পর নিজের এবং নাবালক ছেলের ভরণ-পোষণ চেয়ে স্বামীর বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হন। দীর্ঘ প্রায় ১২ বছর পর শীর্ষ আদালতে রায় আর্থিক সুবিধার নিশ্চয়তা পেলেন মহিলা। দরকার পড়লে কায়িক পরিশ্রম করে হলেও স্ত্রী-সন্তানের ভরণপোষণ করতে হবে, এমনই জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।