মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে বারবার রাষ্ট্রীয় রোষের মুখে পড়েছে নাগরিক স্বাধীনতা। বাকস্বাধীনতাও বিপন্ন হয়েছে একাধিক সময়। বিজেপিশাসিত উত্তরপ্রদেশ যার অন্যতম জ্বলন্ত উদাহরণ। এবার নবরাত্রির উৎসবে মহিলাদের কেন অংশ নেওয়া উচিত নয়, এই প্রশ্ন তুলে সমাজমাধ্যমে পোস্ট করার জেরে চাকরি গেল বারাণসীর এক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের। এমনকী বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরেই তার ঢোকা নিষিদ্ধ করে দেওয়া হল। এই নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে বিতর্কের ঝড়।
প্রসঙ্গত, রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক মিথিলেশকুমার গৌতম সমাজমাধ্যমে লিখেছিলেন, “ভারতীয় মহিলাদের নবরাত্রির ন’দিন উপোস না করে ভারতের সংবিধান এবং হিন্দু কোড বিল পড়া উচিত।” এই পোস্টের পরই হইচই পড়ে যায় বারাণসীর মহাত্মা গান্ধী কাশী বিদ্যাপীঠে। চাকরি যায় মিথিলেশের। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের উপরও নিষেধাজ্ঞা জারি হয় তাঁর উপর। যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের একাংশ মিথিলেশের সমর্থনে এগিয়ে এসেছেন। তাঁদের একটি অংশের দাবি, মিথিলেশ যা বলেছেন তার প্রতিটি কথা সত্যি। অন্য একটি অংশ বলছে, মিথিলেশ যে হেতু এক জন দলিত, তাই অন্যায়ভাবে নিশানা করা হচ্ছে তাঁকে।
উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার সুনীতা পাণ্ডে যদিও বলেন, ‘‘মিথিলেশ যা বলেছেন তা অত্যন্ত আপত্তিকর। কোনও মানুষেরই অধিকার নেই মহিলাদের সম্পর্কে এমন কথা বলার। এক জন শিক্ষকের সর্বদা এই সমস্ত বিতর্কিত কথা থেকে দূরে থাকা উচিত।’’ অন্যদিকে, মিথিলেশের সমর্থনে এগিয়ে আসা পড়ুয়ারা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করে তাঁকে নিজের পক্ষ রাখার সুযোগ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। সূত্রের খবর, উপাচার্য সেই দাবি মেনে নিয়েছেন। দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার জন্য একটি কমিটিও গড়ে দেওয়া হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই বিশ্ববিদ্যালয়ের এহেন সিদ্ধান্তের পর চরম সমালোচনার মুখে যোগী আদিত্যনাথের সরকার। দেশজুড়ে উঠেছে নিন্দার রোল।