বাংলার ঐতিহ্যবাহী দুর্গাপুজোকে সম্মনিত করেছে ইউনেস্কো। আবহমান এই উৎসবের মুকুটে যোগ হয়েছে বিশ্ব হেরিটেজের পালক। আর শারদোৎসবের আবহে তিলোত্তমার মণ্ডপে দেখা যাচ্ছে ইউনেস্কোকে ধন্যবাদের হিড়িক। এবার তাতে শামিল হলেন বাঙালি ময়রাও। বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য তালিকায় বাংলার উঠে আসার গৌরব ফুটে উঠল সন্দেশের ছাঁচে। নতুনবাজারের ছাঁচ শিল্পীর কাছে ইউনেস্কোকে নিবেদিত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুষ্ঠান মঞ্চের ছবিটাই পাঠিয়েছিলেন ভবানীপুরের বলরামের কর্ণধার সুদীপ মল্লিক। ছাঁচে পুরোটা হুবহু ফুটিয়ে তোলা শক্ত। তবে মোবাইলের ছবি ছাপিয়ে তা দেখে দেবী দুর্গার ত্রিনয়ন ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। সেই সঙ্গে লেখা, “আমরা গর্বিত, দেশ গর্বিত, বিশ্ব গর্বিত”, “ধন্যবাদ ইউনেস্কো”। ইংরেজিতে “ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ”ও লেখা হয়েছে।
নরম ও কড়া পাকের মাঝামাঝি গোলাকার সুশ্রী ২৫০ গ্রামের সন্দেশটি দানাপাকে তৈরি। “ইতিমধ্যে শহরের কয়েকটি পুজো কমিটি বিশিষ্ট জনের কাছে সৌজন্য উপহার হিসাবে এ মিষ্টি পছন্দ করেছেন”, জানিয়েছেন সুদীপবাবু। ‘ফোরাম ফর দুর্গোৎসব’-এর সাধারণ সম্পাদক পার্থ ঘোষের সন্দেশটা পছন্দ হয়েছে। তিনি বলেছেন, “পুজোর পরে বিজয়ায় ইউনেস্কো-স্বীকৃতির ছায়া থাকবে। তখনও ইউনেস্কো সন্দেশের কাটতি ভাল থাকার সম্ভাবনা।”
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, একদা লর্ড ক্যানিংয়ের কলকাতায় আগমন উপলক্ষে ‘লেডিকেনি’, ভিক্টোরিয়ার রানি হওয়া উপলক্ষে ‘করোনেশন’ সন্দেশের নমুনা রয়েছে বাংলার ইতিহাসে। ওয়াজিদ আলি শাহের নামে নবাবখাস, মতিলাল নেহরুর নামে ভীম নাগের পেস্তা দেওয়া নেহরু সন্দেশ, আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের নামে আশুভোগ বাংলার ঐতিহ্যের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে। ২০১৯ সালে অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় নোবেল পাওয়ার পরে ‘নোবেল সন্দেশ’ তৈরি করেছিল ফেলু মোদক। এবার এই তালিকায় যোগ হল বলরামের নিবেদন ‘ইউনেস্কো সন্দেশ’।