ফের আভ্যন্তরীণ মতানৈক্যের আঁচ ছড়াল গেরুয়াশিবিরেরর অন্দরে। আমাগী বছরই পঞ্চায়েত নির্বাচন। ইতিমধ্যেই ভোটের প্রস্তুতি শুরু করে রাজনৈতিক দলগুলি। বিগত ২০১৮ সালে মুকুল রায় যে ফর্মুলায় পঞ্চায়েত নির্বাচনে সাফল্য এনেছিলেন সেই পথে কি হাঁটতে চাইছে বঙ্গ বিজেপি? প্রশ্ন উঠছে রাজনৈতিক মহলে। তবে এ নিয়ে দলের সবাই একমত নন। যার ফলে বিপাকে দলীয় নেতৃত্ব।? ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে মুকুল রায়ের হাতেই পঞ্চায়েত নির্বাচনের দায়িত্ব ছেড়েছিলেন অমিত শাহরা। আর মুকুলের স্ট্র্যাটেজিতে ভর করে বেশ কয়েক হাজার গ্রাম পঞ্চায়েত আসনে জিতেছিল বিজেপি। তবে এখন মুকুলের সঙ্গে বিজেপি সংস্রব ছিন্ন হয়েছে। কিন্তু তারপরও ভোট নিয়ে মুকুল যে কৌশল শিখিয়ে গিয়েছেন সেটাই এবার কাজে লাগাতে চান রাজ্য বিজেপির একাংশ নেতারা। আর তাতেই প্রবল আপত্তি জানিয়েছে রাজ্য বিজেপির সাংগঠনিক সাধারণ সম্পাদক অমিতাভ চক্রবর্তী। যা নিয়ে চরমে পৌঁছেছে অন্তর্দ্বন্দ্ব।
উল্লেখ্য, অমিতাভ চক্রবর্তীর তৈরি করা কমিটি নিয়ে আগেই কোন্দল দেখা গিয়েছিল। অভিযোগ উঠেছিল, এখানে পূর্ণ স্বাধীনতা নেই। আর পঞ্চায়েত নির্বাচনের কমিটির সদস্য সৌমিত্র খাঁ, জগন্নাথ সরকার, লকেট চট্টোপাধ্যায়রা চাইছেন পূর্ণ স্বাধীনতা। তাঁরা মুকুলের স্ট্র্যাটেজিই কার্যকর করতে চান। পঞ্চায়েত নির্বাচন সংক্রান্ত তাঁদের কোনও সিদ্ধান্তে দলের সাংগঠনিক পদাধিকারীরা নাক গলান সেটা তাঁরা চাইছেন না। সূত্রের খবর, দলীয় বৈঠকে এই বিষয়ে অমিতাভর সঙ্গে তর্কাও হয় সৌমিত্র-জগন্নাথদের। এবার তা আরও একবার দেখা গিয়েছে। শত্রু শিবিরে ফাটল ধরানোই ছিল ২০১৮ সালের মুকুলের মডেলের বীজমন্ত্র। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিজেপি নেতার কথায়, “মুকুল রায় আমাদের শিখিয়েছিলেন, পঞ্চায়েত নির্বাচন কী ভাবে করতে হয়। প্রথমেই তিনি আমাদের বুঝিয়েছিলেন, যুদ্ধের আগে শত্রু শিবিরে ফাটল ধরানো জরুরি। ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে বহু বিক্ষুব্ধ তৃণমূল নেতাকে বিজেপির টিকিট দিয়েছিলেন। মুকুলদা বুঝিয়েছিলেন, পঞ্চায়েতের মতো স্থানীয় নির্বাচনে তলায় তলায় সিপিআইএমের সঙ্গে এলাকাভিত্তিক জোটও করা যেতে পারে।” সৌমিত্ররা এবারও সেই ভঙ্গিতে খেলতে চাইছেন। কিন্তু তাতে একেবারেই সম্মত হন অমিতাভরা। এ নিয়ে বিজেপিকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। “বাংলায় একটাই মডেল, সেটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের মডেল। সেটা দেখেই মানুষ পঞ্চায়েতে ভোট দেবেন। বিজেপি রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া বলেই নতুন নতুন মডেল খুঁজে বেড়াচ্ছে”, বিজেপিকে একহাত নিয়ে জানিয়েছেন তৃণমূল মুখপাত্র।