দেশে যখন স্বাধীনতা সংগ্রাম চলছে, তখন যেমন ব্রিটিশ সরকারের পাশে দাঁড়িয়েছিল তারা। তেমনি স্বাধীনতার পরেও আরএসএসের বিরুদ্ধে দেশবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগ উঠেছে। নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়তে হয়েছে তাদের। এবার দেশবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগে কট্টরপন্থী সংগঠন ‘পপুলার ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়া’ (পিএফআই)-র ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি হতেই আরএসএস-কেও নিষিদ্ধ করার দাবি উঠেছে।
প্রসঙ্গত, ১৯২৫ সালে কেশব বলিরাম হেডগেওয়ার প্রতিষ্ঠিত হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ভারত স্বাধীন হওয়ার পরে কংগ্রেস, মহাত্মা গান্ধীর পাশাপাশি জাতীয় পতাকাকেও আক্রমণ করেছিল। আরএসএসের মুখপত্র ‘অর্গানাইজার’-এ সঙ্ঘের তৎকালীন কর্ণধার এমএস গোলওয়ালকর লিখেছিলেন, ‘হিন্দুরা কোনও দিনই তিন রঙের পতাকা মানবেন না, কারণ তাঁরা তিনকে অশুভ মনে করেন!’ তবে সে কারণে নয়, আরএসএস প্রথম বার নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েছিল ১৯৪৮ সালের ৩০ জানুয়ারি মহাত্মা গান্ধী হত্যার পরে।
তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সর্দার বল্লভভাই পটেল আরএসএস-কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে অনেক নেতাকে কারারুদ্ধ করেছিলেন সে সময়। শুধু তাই নয় প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুর ‘পরামর্শ’ উপেক্ষা করেই ১৯৪৯-এর জুলাই পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা বহাল রেখেছিলেন প্যাটেল। এ বিষয়ে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের চিঠির জবাবে তিনি লিখেছিলেন, ‘আমার মনে কোনও সন্দেহ নেই যে হিন্দু মহাসভার একটি কট্টরপন্থী অংশ ষড়যন্ত্রে (গান্ধী হত্যা) জড়িত। আরএসএস সরকার এবং দেশের অস্তিত্বের পক্ষে বিপজ্জনক।’
শেষ পর্যন্ত অবশ্য সঙ্ঘ পরিবার মুচলেকা দিয়ে ভারতের জাতীয় পতাকার প্রতি আনুগত্য স্বীকার করার পরে নরম হয়েছিলেন প্যাটেল। তবে আরএসএসের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছিল ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বরেও। উন্মত্ত করসেবকদের হামলায় অযোধ্যার বাবরি মসজিদ ধ্বংস হওয়ার পরে। যদিও প্রধানমন্ত্রী নরসিংহ রাওয়ের সরকারের ওই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছিল। তৎকালীন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসবি চহ্বাণ আরএসএসের পাশাপাশি বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, বজরং দল এবং কট্টরপন্থী মুসলিম সংগঠন ‘জামাত-ই-ইসলামি হিন্দ’ ও ‘স্টুডেন্টস ইসলামিক মুভমেন্ট অফ ইন্ডিয়া’ (সিমি)-কেও নিষিদ্ধ করেছিলেন সে সময়।