এমনিতেই নরেন্দ্র মোদীর জমানায় দেশের অর্থনীতির হাল তথৈবচ। মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা করোনা অতিমারী। কোভিড নিয়ন্ত্রণে আসার পর অর্থনীতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে বলে কেন্দ্রের তরফে দাবি করা হলেও, ক্রমশ তলানিতে গিয়ে পৌঁছচ্ছে ভারতীয় মুদ্রা! ডলার প্রতি টাকার দামে ফের একবার সর্বকালীন পতন ঘটল। বুধবার বাজার খোলার সময় প্রতি ডলার পিছু টাকার দাম ৮১.৯৩-তে নামে। দ্রুতগতিতে ডলার প্রতি টাকার মূল্য ৮২ হওয়ার দিকে এগোচ্ছে বলে আশঙ্কা অর্থনীতিবিদদের। যা মোটেই অর্থনীতির পক্ষে সুখকর নয়। এর আগে কখনও এত নিচে নামেনি টাকার দাম। গতকাল যদিও নিচে নেমে ফের উঠে আসে টাকা। মঙ্গলবার বাজার বন্ধের সময় ডলার প্রতি টাকার মূল্য ছিল ৮১.৫৭৮৮।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে আমেরিকার ফেডারেল রিজার্ভের তরফে তৃতীয় বারের জন্য সুদের হার বাড়ানো হয়। তার পর থেকে টাকার দামে ২.২৫ শতাংশ পতন লক্ষ্য করা গিয়েছে। চলতি বছরে, গত ন’মাসে ডলার প্রতি টাকার মূল্য কমেছে ৯.৭০ শতাংশ। এ বছর মার্চ মাসে প্রথম বার সুদের হার বাড়ায় আমেরিকা। তার পর থেকে টাকার মূল্যে ৭.১০ শতাংশ পতন দেখা গিয়েছে। গত ২১শে সেপ্টেম্বর পর পর তৃতীয় বারের জন্য সুদের হারে ৭৫ বেসিস পয়েন্ট বাড়ায় আমেরিকা, ২০০৮ সালের পর এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ। তাতে বিগত ২০ বছরে ডলারের দাম সর্বোচ্চে গিয়ে ঠেকেছে। আগামী দিনে সুদের হার আরও বাড়বে বলে আগাম জানিয়ে রেখেছে তারা। তাদের যুক্তি, মুদ্রাস্ফীতির প্রভাব আমেরিকার ভাঁড়ারেও টান পড়ছে। তাতেই সুদের হার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত। তার পর থেকে লাগাতার টাকার দামে পতন ঘটে চলেছে। যা ক্রমশই বাড়িয়েছে উদ্বেগ। টাকার দামে এই পতনের পর রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ফের রেপো রেট বাড়াতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছেন অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। এর ফলে ভারতের বিভিন্ন ব্যাঙ্কও ঋণদানের ক্ষেত্রে সুদের হার বাড়াতে পারে বলে মনে করছেন তাঁরা। একই সঙ্গে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দামও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যার জেরে ফের দুর্ভোগের শিকার হতে পারেন দেশের সাধারণ মানুষ।