এখনও আন্দোলন অব্যাহত কুড়মি জনজাতির। মেলেনি কোনো সুরাহাসূত্র। গত দুদিন ধরে তাদের রেল এবং সড়কপথ অবরোধের জেরে জনজীবন কার্যত বিপর্যস্ত। পুরুলিয়া-আদ্রা ডিভিশনের কুস্তাউর স্টেশন-সহ খড়গপুর খেমাশুলি স্টেশনে তাঁদের এই বিক্ষোভ আন্দোলন চলছে। ৫০ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও চলছে আন্দোলন। এই আবহে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের আরও অনেক ট্রেন বাতিল হল আজ। বহু ট্রেনকে অন্য পথে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করার ফলে গাড়ি-লরি পর্যন্ত আটকে রয়েছে বলে খবর। এবার কুড়মি সম্প্রদায়ের সমস্যার সমাধানে উদ্যোগী হলেন খোদ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই কেন্দ্রকে এই বিষয়ে চিঠি পাঠাল নবান্ন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কুড়মি সম্প্রদায়ের দাবি ছিল – তাঁদের কুড়মালি ভাষাকে সংবিধানে স্বীকৃতি দিতে হবে। আর তাঁদেরকে তফশিলি উপজাতিভুক্ত করতে হবে। একইসঙ্গে তাঁদের সারনা ধর্মের কোড তৈরি করতে হবে। এই দাবিগুলিকে নিয়েই শুরু হয়েছিল কুড়মি সমাজের রেল অবরোধ। কিন্তু তাতে কর্ণপাত করছে না কেন্দ্রীয় সরকার এবং রেল মন্ত্রক। কুড়মি সম্প্রদায়ের বিক্ষোভ-অবরোধের জেরে বাংলার মানুষ অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন। সেটা জানতে পেরেই এবার উদ্যোগী মমতা।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী, কেন্দ্রের আদিবাসী মন্ত্রকে চিঠি পাঠিয়েছে নবান্ন। কুড়মিদের এই দাবিকে যাতে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হয়, রাজ্যের পক্ষ থেকে সে কথাই ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। এই রেল অবরোধ নিয়ে মন্ত্রী মানসরঞ্জন ভূঁইয়া বলেন, ‘”মুখ্যমন্ত্রী আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন কুড়মি সম্প্রদায়ের এই অবরোধ শান্তিপূর্ণভাবে তুলে নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা করতে। দুর্গাপুজোর মুখেই টানা দুদিন রেল পরিষেবা বিপর্যস্ত থাকায় ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন বহু মানুষ। নিত্যযাত্রী থেকে শুরু করে হকাররা পর্যন্ত এই অবরোধে ভুক্তভোগী।” আজ বৃহস্পতিবার মন্ত্রীর সঙ্গে ফের বৈঠকে বসতে পারেন কুড়মি সংগঠনের নেতারা। সূত্র অনুযায়ী জানা গিয়েছে এমনটাই। এখন পরিস্থিতি কোন অভিমুখে এগোয়, সেদিকেই তাকিয়ে বাংলার রাজ্য-রাজনীতি।