গঙ্গার সৌন্দর্যায়নের বরাবরই বিশেষভাবে উদ্যোগী হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। এবার নদীতীরের তিলোত্তমাকে আরও মনোহর করে তুলতে নিয়ে অভিনব পরিকল্পনা নিচ্ছে রাজ্য। কলকাতা ও তার সংলগ্ন এলাকার গঙ্গার পাড়গুলিকে সাজাতে বড় পদক্ষেপ নেওয়া হতে চলেছে। এই মপ্রকল্পের আওতায়, কলকাতার মিলেনিয়াম পার্ক থেকে দক্ষিণেশ্বর মন্দির পর্যন্ত গঙ্গা তীরবর্তী বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে সৌন্দর্যায়ন করা হবে। এছাড়াও হাওড়ায় অর্থাৎ গঙ্গার পশ্চিম পাড়কেও সাজিয়ে তোলার ভাবনা রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে গঙ্গার উভয় তীরবর্তী এলাকার উন্নয়নের পরিকল্পনা থেকেই একটি মাস্টার প্ল্যান তৈরি করতে চলেছে রাজ্য সরকার। মিলেনিয়াম পার্ক থেকে দক্ষিণেশ্বর; প্রায় ১৩ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে গঙ্গার পাড়ের সৌন্দর্যায়ন কেমনভাবে হবে, তার সবিস্তার বিবরণ থাকবে এই মাস্টার প্ল্যানে। খড়গপুর আইআইটি বা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে পাড় সুরক্ষিত রাখার বিষয়ে আলোচনা করে রিপোর্ট তৈরি করা হবে, বলে জানা গিয়েছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গঙ্গা তীরবর্তী ঘাটগুলি অধিকাংশ বয়সে প্রাচীন। বেশ কিছু ঘাট আবার হেরিটেজ তকমা পেয়ে গিয়েছে। ঘাটগুলির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে শতাব্দী প্রাচীন ইতিহাস। ঘাটগুলির ইতিহাস-ঐতিহ্য বজায় রেখে, সৌন্দর্যায়নের জন্য কীভাবে সংস্কার করা হবে, তার উপায় খুঁজবে এই মাস্টার প্ল্যান। ঐতিহ্যবাহী শ্মশান ঘাটগুলির উন্নয়নের রূপরেখাও তৈরি করা হবে। ঘাট সংলগ্ন মন্দির, মসজিদ, গুরুদ্বার, আশ্রম ইত্যাদি ধর্মীয় স্থানগুলির সৌন্দর্যায়নের রূপরেখাও নির্ধারণ করা হবে। মাস্টার প্ল্যানের মাধ্যমে পাড়ে কোথায় ফোয়ারা থাকবে, কোথায় গাছ লাগানো হবে, হাঁটার পথ কোথায় থাকবে হবে, সুলভ শৌচাগার কোথায় তৈরি হবে; সেই সব কিছু খুঁটিনাটি বিষয় ঠিক করা হবে। এলাকার লুক অপরিবর্তিত রেখে সৌন্দর্যায়নের রূপরেখা ঠিক করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এতদিন গঙ্গার পাড় সাজানোর জন্যে তারা কলকাতার দিকে বেশি নজর দিয়েছে রাজ্য সরকার। আগামী দিনে হাওড়ার দিকের পাড়গুলিকেও সমান গুরুত্ব দিয়ে সাজানো হবে। এমনই জানিয়েছেন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী তথা কলকাতার মহানাগরিক ফিরহাদ হাকিম।