স্বাস্থ্যক্ষেত্রে ফের সারা দেশে অগ্রণী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। এবার থেকে প্রথমে মৃতদেহের টেম্পোরাল বোন, ঘাড়, গলা বা নাকের কোনও সূক্ষ্ম প্রত্যঙ্গ বারবার কেটে হাত পাকাতে হবে। তারপরই রোগীর অস্ত্রোপচার করা হবে। আবার সেই অস্ত্রোপচার অনলাইনে পাশের ঘর থেকে বসে দেখবেন সিনিয়র অধ্যাপক বা বিভাগীয় প্রধান চিকিৎসক। ঠিক এমনভাবেই সেজে উঠছে পিজি হাসপাতালের ‘ইনস্টিটিউট অফ অটো রাইনোল্যারিঙ্গো অ্যান্ড হেড নেক সার্জারি’। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর জানাচ্ছে, ভারতের একমাত্র পিজি হাসপাতালেই এমন ‘সেন্টার অফ এক্সেল্যান্স’ তথা উৎকর্ষ কেন্দ্র গড়ে তোলা হল। আপাতত চূড়ান্ত তৎপরতা পিজি হাসপাতালে। নাক-কান-গলা বিভাগের তিন ও চারতলায় এই অত্যাধুনিক উৎকর্ষকেন্দ্র গড়ে তোলার জন্য শুরু থেকেই নজরদারি চালিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রায় চার বছর ধরে কাজ চলছে। খরচ হয়েছে প্রায় ২০০ কোটি টাকা। পাঁচতলায় ছ’টি অপারেশন টেবিল রয়েছে। হেড অ্যান্ড নেক সার্জারির অধ্যাপক ডা. অরুণাভ সেনগুপ্তর কথায়, ‘‘চারবছর ধরে তিল তিল করে যে স্বপ্ন দেখেছি আমরা, আজ তা তিলোত্তমার চেহারা নিয়েছে। প্র্যাকটিস মে পারফেক্ট। সাফলে্যর একমাত্র মন্ত্র। দেশের একমাত্র উৎকর্ষকেন্দ্র যেখানে গবেষণা-রোগী দেখা একসঙ্গে চলবে।’’
উল্লেখ্য, বুধবার উৎকর্ষকেন্দ্রের আনুষ্ঠানিক প্রবেশ। রোগীর মঙ্গলকামনায় ছোট করে নারায়ণ পুজো হওয়ার কথা। তারপরই কিছু জরুরি যন্ত্রপাতি জুড়ে কাজ শুরু হবে। পূর্ত ও তথ্য প্রযুক্তি দপ্তরের যৌথ উদ্যোগে এমন প্রকল্প এখন দেশের চিকিৎসা বিজ্ঞানে মাইলফলক। অধ্যাপক অরুণাভ সেনগুপ্তের কথায়, ‘‘মোট ১০০টি শয্যা। ৫০টি পুরুষের। বাকি মহিলাদের। ৫টি আইসিইউ, এবং দু’টি পিকু (পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট) এছাড়াও থাকছে একটি কেবিন।” তবে কেবিনের জন্য রোগীকে অর্থ দিতে হবে, অন্তত এমনটাই বলছে পিজি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি, এসএসকেএম হাসপাতাল সূত্রে খবর, টেম্পোরাল বোন, নাক, কান গলার বিভিন্ন সূক্ষ্ম প্রত্যঙ্গ ডিসেকশন করার সুযোগ থাকবে। জার্মানি থেকে অানা হয়েছে বারোটি অত্যাধুনিক মাইক্রোস্কোপ। প্রতিটি টেবিলে একটি করে থাকবে। গোটা বিষয়টি অনলাইনে নিজের কক্ষে বসে প্রত্যক্ষ করবেন অধ্যাপকমণ্ডলী। কোনও সমস্যা হলে সঙ্গে সঙ্গে তা শুধরে দেওয়ার জন্য থাকছে পৃথক মনিটর। অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্স বা পিজিআই চণ্ডীগড়ের মতো প্রথম সারির হাসপাতালকে চ্যালেঞ্জ করার মতো কারিগরি দক্ষতা বহন করছে এসএসকেএম। এমনই জানা গিয়েছে স্বাস্থ্যভবন সূত্রে।