বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণের সেরা পার্বণ দুর্গাপুজো। আর তাকে স্বীকৃতি দিয়েছে খোদ ইউনেস্কো।তাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন, ১ সেপ্টেম্বর কলকাতায় হবে মহামিছিল। আর সেই দিন থেকেই কার্যত কলকাতার দুর্গাপুজো তো বটেই, রাজ্যের জেলায় জেলায়ও চলে আসবে পুজোর আমেজ। কলকাতার বুকে আগামিকাল মহামিছিলে পা মেলাবেন মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি ইউনেস্কোর প্রতিনিধিরা এবং কলকাতার সমস্ত দুর্গাপুজো কমিটির প্রতিনিধিরা। থাকবেন থিমশিল্পী, প্রতিমা শিল্পী থেকে শুরু করে পড়ুয়া এবং নানান সাংস্কৃতিক শিল্পীরাও।
বৃহস্পতিবার জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির সামনে থেকে শুরু হতে চলেছে মহামিছিল। শেষ হবে রানি রাসমণি রোড হয়ে রেড রোডের ওপরে। প্রজাতন্ত্র দিবস বা স্বাধীনতা দিবসের কুচকাওয়াজের মেজাজেই সাজানো হচ্ছে রেড রোডকে। জোড়াসাঁকো থেকে শুরু হওয়া শোভাযাত্রায় নেতৃত্ব দেবেন মুখ্যমন্ত্রী। শুরু হবে ঠিক দুপুর ২ টোয়। জোড়াসাঁকো থেকে রেড রোড প্রায় সাড়ে চার কিলোমিটার পথ। ফলে খুব বেশি হলে ঘণ্টা দেড়েক সময় লাগবে বলে মনে করছে রাজ্য প্রশাসন। সেই অনুযায়ী রেড রোডের অনুষ্ঠান সাজানো হয়েছে। জোড়াসাঁকো থেকে রেড রোড পর্যন্ত রাস্তার দু’ধার সাজিয়ে তোলা হচ্ছে ব্যানার, পোস্টার দিয়ে। মিছিলের গোটা যাত্রাপথে রাস্তার দুই দার বাসের ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে ফেলা হচ্ছে। সেই ব্যারিকেডের বাইরে থেকে সাধারণ মানুষ মিছিল দেখতে পারবেন।
মহামিছিলের আয়োজন নিয়ে ইতিমধ্যেই লালবাজারে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয়ে গিয়েছে। সেই বৈঠকে মিছিলের প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা হয়। নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে পুলিশি ব্যবস্থাকে তিনটি স্তরে ভাগ করা হয়েছে– জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি, সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ এবং রেড রোড। সামগ্রিক দায়িত্বে থাকবেন স্পেশাল সিপি দময়ন্তী সেন। ৬ জন যুগ্ম কমিশনার পদমর্যাদার পুলিশ অফিসার ওই ৩টি জোনের দায়িত্বে থাকবেন। প্রতিটি জোনে ১ হাজার করে মোট ৩ হাজার পুলিসকর্মী থাকবেন। পথে নামবেন ২২ জন ডিসি এবং ৪০ জন এসি। ডোরিনা ক্রসিং এবং গিরীশ পার্কে থাকবে ৫০টি পুলিস পিকেট।
ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর (এনসিআরবি) সাম্প্রতিক রিপোর্ট অনুযায়ী দেশের সব থেকে নিরাপদ শহর কলকাতা। সেই কথা মাথায় রেখেই মিছিলে সামিল করা হচ্ছে কলকাতা পুলিশের মহিলা বাহিনী ‘উইনার্স’কেও। থাকবে কুইক রেসপন্স টিমও। বুধবার থেকেই শহরকে পুলিশের নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হচ্ছে। মিছিলের নেতৃত্ব দেবেন বাংলার অগ্নিকন্যা মমতাই। উপস্থিত থাকবেন ভারতে নিযুক্ত ইউনেস্কোর প্রতিনিধি এরিক ফল্ট এবং ইউনেস্কোর ২০০৩ সালের ‘ইনট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেজ’ রক্ষা সম্মেলনের সম্পাদক টিম কার্টিস। মিছিলে থাকবেন কলকাতা লাগোয়া হাওড়া ও সল্টলেকের পুজো উদ্যোক্তারা। এছাড়া মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে শিল্পী, সাহিত্যিক, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি জগতের বিশিষ্টজনেরাও পা মেলাবেন। সঙ্গে থাকবেন প্রায় ১০০ জন বাউলশিল্পী।