আজকাল জঙ্গল, পাহাড়ে ঘুরতে গেলেই মানুষ প্রথম প্রেফার করে হোমস্টে-তে থাকা। এবার উত্তরবঙ্গের মতো কলকাতায় মিলবে হোমস্টে-র আতিথেয়তা। বিভিন্ন কারণে দেশ বিদেশ থেকে মানুষজন আসেন কলকাতায়। কম খরচে ঘরোয়া পরিবেশে থাকতে চান অনেকেই। এবার তেমনটাই পাবেন অতিথিরা। রাজ্য পর্যটন দপ্তরের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে শহরে হোমস্টে পরিষেবা চালু করল কলকাতা পুরসভা। বাড়িতে হোমস্টে পরিকাঠামো গড়ে তোলার জন্য মালিককে ১ লক্ষ টাকার আর্থিক সহায়তা দেবে পর্যটন দফতর। চিকিৎসা এবং ভ্রমণের জন্য বাইরে থেকে প্রচুর মানুষ শহরে আসেন। চাকরি ও জয়েন্ট এন্ট্রান্সের মতো পরীক্ষা দিতে এসে অনেক পরীক্ষার্থীর পক্ষে মোটা টাকা দিয়ে ঘরভাড়া নেওয়া সম্ভব হয় না। শহরে অতিথিদের জন্য হোমস্টে-তে সুলভে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে সব মালিক চাইলেই নিজের বাড়িতে হোম স্টে করতে পারবেন না। এক্ষেত্রে পুরসভা একটি গাইডলাইন তৈরি করেছে। প্রথমত, ১ হাজার বর্গফুটের নিচে কোনও বাড়ি ও ফ্ল্যাটে হোমস্টে খোলা যাবে না। দ্বিতীয়ত, অন্তত ১২টি শয্যা এবং দু’টি বাথরুম থাকবে। বাথরুমে কমোড রাখতে হবে। সবথেকে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, হোমস্টে খুললে সেখানে বাড়ির মালিক বা পরিবারের সদস্যদের থাকতে হবে। অন্তত একজন সদস্যকে ২৪ ঘণ্টা থাকতে হবে। এইসব শর্ত পূরণ করলে তবেই হোমস্টে খোলার অনুমতি দেবে পুরসভা।
উল্লেখ্য, হোমস্টে চালু করতে হলে পুরসভায় অনলাইনে আবেদন করতে হবে বাড়ি মালিককে। শর্ত পূরণ করলে হোমস্টে-র জন্য পুরসভা লাইসেন্স দেবে। হোমস্টে খুলতে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে প্রচার করবেন কাউন্সিলররা। তার আগে মঙ্গলবার মাসিক অধিবেশনের পর পুরভবনে কাউন্সিলরদের নিয়ে কর্মশালার আয়োজন করা হয়। সেখানে পর্যটন দপ্তরের আধিকারিকরাও ছিলেন। এদিম মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, “পর্যটক ছাড়াও শহরে অনেক মানুষ চিকিৎসার জন্য আসেন। কম খরচে তাঁরা হোমস্টে-তে থাকতে পারবেন। এতে বাড়ির মালিকরা উপকৃত হবেন। সেইসঙ্গে কর্মসংস্থানও হবে। পুরসভারও রাজস্ব আসবে। অর্থনীতি চাঙ্গা হবে।” হোমস্টে পরিকাঠামো গড়ে তোলার জন্য বাড়ি মালিককে পর্যটন দপ্তর থেকে ১ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য করা হবে বলে তিনি জানান। পর্যটন দপ্তরের ওয়েবসাইটে মিলবে শহরের হোমস্টে-র ঠিকানা। কলকাতা পুরনো শহর। এখানে অনেক দর্শনীয় স্থান, স্থাপত্য ও ঐতিহ্য রয়েছে। যার টানে সংস্কৃতির পীঠস্থান দর্শন করতে দেশ-বিদেশ থেকে প্রচুর পর্যটক আসেন। তার ওপর বাড়তি যোগ হয়েছে দুর্গাপুজো। ইউনেস্কো স্বীকৃতি দেওয়ার পর দুর্গাপুজোর হাত ধরে শহরে পর্যটন ব্যবসা আরও বাড়বে বলে আশাবাদী পর্যটন দপ্তর।