দৃশ্যটি দেখেই শিউরে উঠছেন প্রত্যেকে! কোলে সাদা কাপড়ে মোড়ানো ভাইয়ের দেহ এগিয়ে যাচ্ছে ১০ বছরের দাদা। চোখের সামনে ছোট্ট ভাইয়ের মৃত্যু দেখেছে সে। সৎকার করতে হবে, কিন্তু মেলেনি কোনও শববাহী গাড়ি। তাই ভাইয়ের মৃতদেহ কোলে নিয়েই হাঁটছে ছেলেটি। প্রায় ৫০ মিটার রাস্তা হেঁটে এসেছে সে। সঙ্গে রয়েছেন বাবা। এই করুণ দৃশ্য মোবাইলে বন্দি করেছে পথচারীরা। সেই ভিডিও ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়ে গিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। উত্তরপ্রদেশের এমন ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই প্রবল নিন্দার মুখে সে রাজ্যের সরকার।
পাশাপাশি, ২ বছরের শিশুটির মৃত্যুর ঘটনাও সমানভাবে মর্মান্তিক। বাবা পেশায় দিন মজুর। ঘরে রয়েছে সৎ মা। পুলিশ জানিয়েছে, শুক্রবার কাঁদছিল দু’ বছরের কলা কুমার। শিশুর কান্নায় বিরক্ত বোধ করেন মা সীতা। রেগে গিয়ে দিল্লী-সাহারানপুর হাইওয়েতে বাঘপতে একটি ব্যাঙ্কের কাছে দুধের শিশুকে ছুড়ে ফেলে মা। সেই সময় একটি গাড়ি চাপা দিয়ে চলে যায় তাকে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় শিশুর। এই ঘটনার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই মহিলার বিরুদ্ধে পুলিশি পদক্ষেপ করা হয়েছে। বাঘপথের সার্কেল অফিসার দেবেন্দ্র কুমার শর্মা জানিয়েছেন, ভারতীয় দণ্ডবিধির নির্দিষ্ট ধারার আওতায় সীতার বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে এবং তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ময়না তদন্তের জন্য বাঘপথ জেলায় হাসপাতালে পাঠানো হয় কলার দেহ। ময়নাতদন্তের পর মৃত ছেলের দেহ শামলি জেলার বাসিন্দা প্রবীণ কুমারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। সঙ্গে ছিল তাঁর ১০ বছরের ছেলে সাগর কুমার ও এক আত্মীয় রামপাল।
এবিষয়ে রামপাল জানিয়েছেন, ছেলের মৃতদেহ বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে শববাহী যানের অনুরোধ করেন। তবে কেউ সেই অনুরোধে কর্ণপাত করেননি বলে অভিযোগ প্রবীণের। তাই তিনি নিজেই ছেলের মৃতদেহ কোলে করে রওনা দেন। প্রবীণ জানিয়েছেন, “যেহেতু দেরি হয়ে গিয়েছিল আমি নিজেই মৃতদেহ কোলে তুলে নিই। ময়না তদন্তের ঘর থেকে বেরিয়ে এসে হাঁটা শুরু করি। হাসপাতাল থেকে দূরত্ব প্রায় ৪০ কিলোমিটার। কিছুটা হাঁটার পর আমি ক্লান্ত হয়ে যাই। আমার বড় ছেলে সাগরের কাছে দিয়ে দিই মৃতদেহ।”