সম্প্রতি তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় প্রকাশ্যে দাবি করেছিলেন, ভোটের আগে এবং পরে দলে গুরুত্ব না পেয়ে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে আসতে চেয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ৷ সেই সময় দিলীপ ওই বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানালেও তাঁর সাম্প্রতিক মোদী সরকার বিরোধী মন্তব্যের জেরে নতুন করে ওই জল্পনা বাড়ছে৷ কলকাতা থেকে জেলা, সর্বত্রই এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি৷ বিজেপির নেতা, কর্মী থেকে শাসক তৃণমূলের অন্দরেও এই প্রশ্ন ঘোরাফেরা করছে, ‘তবে কি বাবুলের পথেই হাঁটবেন দিলু দা?’’ রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, সেই সম্ভবনা নেই এটা জোর দিয়ে কখনই বলা যাবে না৷ কারণ, বর্তমান দলবদলের জমানায় অসম্ভব বলে কিছুই নেই৷
ঘটনার সূত্রপাত, রবিবার কেন্দ্রের একটি সরকারি অনুষ্ঠান থেকে দিলীপ ঘোষ বেশ জোর গলায় দাবি করেছিলেন, ‘সিবিআই-তৃণমূল সেটিং হয়ে গিয়েছে। কিন্তু ইডি পোষ মানার কুকুর নয়।’ যা নিয়ে শাসক তৃণমূল থেকে বিজেপি, রাজনীতির কানাগলিতে জোর আলোচনা চলছে৷ তবে সোমবারও নিজের ‘সেটিং’ তত্ত্বে অনড় মেদিনীপুরের সাংসদ৷ এদিন সকালে ইকোপার্কে প্রাতঃভ্রমণে গিয়েও দিলীপ অকপটে বলেন, ‘আমি নিজের দুঃখের কথায় বলেছি। ভোট পরবর্তী হিংসায় আমরা ৬০ জন কর্মীকে হারিয়েছি। আদালতের নির্দেশে সিবিআই তদন্তে নামলেও সেই অর্থে কি পদক্ষেপ নিয়েছে ওরা? ওদের কাছ থেকে তো ন্যায়্য কোনও বিচার পাইনি৷ ফলে ওদেরকে মেনে নেব কী করে? তাই যেটা সত্যি সেটাই বলেছি৷’
রাজনৈতিক মহলের মতে, রাজ্যে এই মুহূর্তে একাধিক দুর্নীতি এবং খুনের মামলার তদন্তভার রয়েছে সিবিআইয়ের হাতে৷ অন্যদিকে সিবিআই ইস্যুতে প্রথম থেকেই কেন্দ্রের সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিহিংসার অভিযোগে সরব তৃণমূল৷ এমন আবহে দিলীপের মন্তব্য, আসলে সিবিআইয়ের মতো সংস্থার নিরপেক্ষতাকেই বড়সড় প্রশ্নচিহ্নের সামনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে বলে মনে করছে ওই মহল৷ তাঁদের মতে, দিলীপ ঘোষ সাধারণ কোনও কর্মী নন৷ তিনি বিজেপির এরাজ্যের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি, বর্তমানে কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি৷ ফলে তাঁর এমন মন্তব্যকে কেন্দ্র করে আলোচনা হওয়াটাই স্বাভাবিক৷ তবে শুধু আলোচনাতেই থেমে নেই তা। তৃণমূলে যোগ দেবেন কিনা তা নিয়ে শুরু হয়েছে জোর জল্পনা।