নানা সময়ে দেশের নানা প্রান্তে চলতে থাকা ‘অপারেশন লোটাস’-এর মাঝে খড়কুটোর মতো পাওয়া গিয়েছে ‘ভিটামিন বিহার’। যা জাতীয় রাজনীতিতে ভরপুর অক্সিজেন দিচ্ছে কংগ্রেসকে। ফলে ধুঁকতে থাকা শতাব্দীপ্রাচীন দল হঠাৎ করেই চাঙ্গা। পালের এই হাওয়া এবার তারা ছড়িয়ে দিতে চাইছে গোটা দেশে। এই দৌড়ে প্রাথমিকভাবে জোর দেওয়া হচ্ছে উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে।
চলতি বছরের শেষে গুজরাট ও হিমাচলপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন। সেই প্রস্তুতি কংগ্রেস শুরু করে দিয়েছে অনেকদিন আগেই। দুই পর্যবেক্ষক টি এস সিংদেও এবং মিলিন্দ দেওরার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর রাজ্যে ভোটযুদ্ধের প্রস্তুতিতে প্রাণপাত করছেন গুজরাটের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রঘু শর্মা।
দেশের পশ্চিমাঞ্চলের রাজ্যের থেকেও অবশ্য কংগ্রেস বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে হিমাচলপ্রদেশকে। কর্মসমিতির সদস্য ও হিমাচলের দায়িত্বে থাকা রাজীব শুক্লার নেতৃত্বে পাঁচ বছর পুরনো ক্ষতে অনেকটাই প্রলেপ দিতে পারা গিয়েছে বলে দাবি কংগ্রেসের অন্দরমহলে। তবে বিহারের নতুন পট পরিবর্তনের পর গেমপ্ল্যানে কিছুটা বদল আনতে চাইছে কংগ্রেস। যে সব রাজ্যে বিজেপির সঙ্গে সম্মুখ সমর, সেগুলি তো থাকছেই, তবে দেশের প্রাচীনতম রাজনৈতিক দল যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও সেখানকার আঞ্চলিক দলগুলির সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতি করতে।
প্রাথমিকভাবে ছোট ছোট দলগুলির মনে মহারাষ্ট্র ও বিহারের জুজু ঢুকিয়ে দিতে চাইছে কংগ্রেস। তাদের বিশ্বাস করাতে চাইছে যে, বিজেপি মাৎস্যন্যায়ে বিশ্বাসী। হয় ছোট দলগুলির নির্বাচিত প্রায় সব প্রতিনিধিদের দলে টেনে সেই দলের অস্তিত্ব সংকটে ফেলে দেওয়া হবে, অথবা মহারাষ্ট্রের মতো দলে ভাঙন ধরিয়ে নিজেদের হাতের পুতুল রাখা হবে আঞ্চলিক দলগুলিকে। এরপর শুরু হবে সেই দলের নেতাদের মনে বিশ্বাস জুগিয়ে তাদের কংগ্রেস শিবিরে নিয়ে আসার কাজ।
যে মুহূর্তে বিহারে শপথ নিলেন নীতীশ কুমার ও তেজস্বী যাদব, প্রায় সেই সময়ই ভীতি সঞ্চারের কাজ শুরু করে দিলেন অসমের কংগ্রেস নেতা গৌরব গগৈ। বলেন, ‘উত্তর-পূর্বাঞ্চলের দলগুলির উচিত বিহারকে দেখে শেখা ও সতর্ক হওয়া। বিজেপি এখন রাজ্যে রাজ্যে মহারাষ্ট্র মডেল লাগু করতে চাইছে। এই চক্রান্ত বুঝতে পেরেই নীতীশজি বিজেপির সঙ্গ ছেড়ে কংগ্রেস ও সমমনস্ক দলগুলির সঙ্গে হাত মেলালেন। উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিরও উচিত তা করা’।