ফের বিতর্কের মুখে কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। এবার কেরলের সিপিএম সরকারের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী থমাস আইজ্যাকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলায় তদন্তে আদালতে গুরুতর প্রশ্নের মুখে পড়ল ইডি। কেরল ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড বোর্ডের দুর্নীতির মামলায় ইডি থমাসকে তাঁর আয়কর রিটার্ন, সঞ্চয় এবং আর্থিক লেনদেনের খতিয়ান জমা করতে বলে। কেরল হাইকোর্টের বিচারপতি ভিজি অরুণ আজ এই মামলায় ইডি-র সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, রাইট টু প্রাইভেসি অর্থাৎ ব্যক্তিগত তথ্য গোপনীয়তার অধিকার এখন মৌলিক অধিকার হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে। একজন নাগরিকের কাছে কী করে তদন্তের শুরুতেই এই তথ্য চাওয়া যায়? এটা গোপনীয়তার অধিকার লঙ্ঘন বলেই ণনে করছেন অনেকে। বিচারপতির প্রশ্ন, থমাস আইজ্যাক এই মামলায় অভিযুক্ত নন। সন্দেহভাজনও নন এখনও পর্যন্ত। তাঁকে সাক্ষী করা হয়েছে। তদন্তের শুরুতেই কী করে একজন নাগরিকের সঞ্চয় সংক্রান্ত তথ্য চাওয়া যেতে পারে? উঠছে প্রশ্ন।
প্রসঙ্গত, কেরল হাইকোর্টের বিচারপতির এই পর্যবেক্ষণ দুর্নীতির মামলায় সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টের সম্পত্তির হিসাব দাখিল সংক্রান্ত নির্দেশ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। আইনজীবী মহল এবং তৃণমূলের একাংশের বক্তব্য, অনেক ক্ষেত্রে আদালতই তদন্তকারীর ভূমিকা নিচ্ছে। কেরলের মামলায় ইডি-র পক্ষে আইনজীবী জয়শঙ্কর ভি নায়ার বলেন, আইজ্যাকের কাছে যদি হিসাবপত্র, নথিপত্র না থাকে, তিনি সময় চেয়ে নিতে পারেন। বিচারপতি জবাবে বলেন, অসহযোগিতা কেন বলা হবে? একজন নাগরিক কেন ব্যক্তিগত তথ্য তদন্তকারীদের দেবেন, যদি না তিনি অভিযুক্ত বা সন্দেহভাজন ব্যক্তি হন? প্রক্রিয়ার নিয়ম মেনে তদন্ত চালাতে হবে। বিচারপতির এই পর্যবেক্ষণের মুখে ইডি-র আইনজীবী উপরমহলের সঙ্গে পরামর্শ করার জন্য সময় চান। মামলাটি উঠবে ফের ১৭ই আগস্ট।
উল্লেখ্য, আইজ্যাককে আজই ইডি-র কাছে তাঁর আর্থিক লেনদেন ও সঞ্চয় সক্রান্ত তথ্য নিয়ে হাজির হতে বলেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি। কেরল ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড বোর্ডের বিষয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য তলব করা হয়। কিন্তু জানানো হয়নি, কোন অপরাধের তদন্তের জন্য তাঁকে তলব করা হয়েছে। কেরলের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী আইজ্যাক রাজনৈতিক মহলের পাশাপাশি শিক্ষা জগতেও খুবই পরিচিত ব্যক্তি। রাজ্যের স্বার্থে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কারণে সব রাজ্যেই অর্থমন্ত্রীরা তাঁকে চেনেন। গতবার তাঁকে আর মন্ত্রী করা হয়নি। কেরলের ওই মামলাতেই সিপিএমের চার বিধায়ক প্রধান বিচারপতির এজলাসে জনস্বার্থের মামলা দায়ের করেছেন ইডি-র বিরুদ্ধে। সেই মামলারও শুনানি হওয়ার কথা আজ।