থ্রিলার সিনেমা বা ওয়েব সিরিজগুলোতে কখনও কখনও এমন দৃশ্য চোখে পড়লেও বাস্তবে? এও সম্ভব? হাওড়ার হাড়হিম করা ঘটনায় তাজ্জব পুলিশ সহ এলাকাবাসী। চৌকাঠে রক্ত মেখে বসে বাড়ির ছোট বৌ। কুপিয়ে কুপিয়ে মেরেছে দুজনকে। বাড়ির কনিষ্ঠতম সদস্য তিয়াশা বাবা-মায়ের কোপানো দেহ দেখে ছুটে গিয়েছিল কাকু-কাকিমার কাছে, যদি তাঁরা এসে মা-বাবাকে বাঁচান। তিয়াশার ডাকে সাড়া দিয়ে তাঁরা এসে দেখেন, রক্ত চোখে-মুখে মেখে বসে আছেন হত্যাকারী পল্লবী। তাঁরা ওই নারকীয় মূর্তি দেখে চমকে যান। তিয়াশা ছুটে যায় কোপানো মা-বাবার দেহর দিকে। তার পরে তিয়াশাকেও কোপাতে শুরু করে পল্লবী। সেই দৃশ্য সইতে না পেরে, এগিয়ে আসেন ঠাকুমা মাধবী ঘোষ। তারপর ঠাকুমার উপরেও পরে একের পর এক কাটারির কোপ। কাটারি দিয়ে কুপিয়ে একে একে চারজনকে হত্যা করে পল্লবী। হাওড়ায় খুনের ঘটনাক্রম দেখলে হাড়হিম হয়ে যেতে বাধ্য। হাওড়ার ওই বাড়িটিতে সাধের সংসার ছিল ঘোষ পরিবারের। হত্যাকারী পল্লবীর মনে কেন এত হিংসা জমা হয়েছিল, তার টের পাননি কেউই। বুধবার রাতে পরিবারের সদস্য সুব্রত ঘোষ ও তাঁর বাবা হঠাৎই বড় ছেলে ও বড় বৌমার উপর ছোট বৌমার ঘাতক হামলার খবর পান ছোট্ট তিয়াশার কাছে।
উল্লেখ্য, ১৩ বছরের মেয়ের সামনেই তাঁর মা-বাবাকে কুপিয়ে মারে বাড়ির ছোট বৌ পল্লবী। পরিস্থিতি সামলাতে তাঁরা ছুটে আসেন। দেখেন চৌকাঠে রক্ত চোখে-মুখে মেখে বসে আছেন ছোট বৌমা পল্লবী। মা-বাবার রক্তাক্ত দেহ দেখে থাকতে না পেরে তাঁদের বাঁচাতে ছুটে যায় ওই তিয়াশা। বাগে পেতেই তিয়াশাকে হামলা করে পল্লবী। একে পর এক কোপ পড়তে থাকে তিয়াশার শরীরে। কুপিয়ে কুপিয়ে তাঁকেও মারা হয়। সেই পরিস্থিতিতে এগিয়ে আসেন তিয়াশার ঠাকুমা মাধবী ঘোষ। নিস্তার পাননি তিনিও। পুলিশ পল্লবীকে আটক করে চারটি মৃতদেহ উদ্ধারের পর কোনওকমে তালা ভেঙে উদ্ধার করে পল্লবীর ছোট ছেলেটিকে। বাড়ির কর্তা শিশির ঘোষ একের পর এক হত্যালীলা দেখে কোনক্রমে দরজা খুলে বেরিয়ে যায় রাস্তায়, তিনি পালিয়ে যাওয়ার কোনওমতে প্রাণে বাঁচেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দেবরাজ ঘোষ অনেকদিন ধরেই তার বাবা-মায়ের উপর অত্যাচার করত। সম্পত্তি লিখে দেওয়া থেকে শুরু করে, গাড়ি কিনে দেওয়া, এমনকি ব্যাঙ্কের যাবতীয় তথ্য তাকে তুলে দিতে হবে, সেই কারণেই চলত অত্যাচার। এর আগেও একবার গ্রেফতার হয় দেবরাজ ঘোষ। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে তার বাবা-মায়ের উপর অত্যাচার, মারধর এবং বাড়ি ভাঙচুরের।