একুশের ভোটে ভরাডুবির পর থেকেই বঙ্গ বিজেপির অন্দরে মুষল পর্ব চলছে! সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ, হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ত্যাগ, লোকাল ট্রেন থেকে কলকাতার রাজপথে দলীয় নেতার বিরুদ্ধে পোস্টার— নানা ভাবে দলের একাংশের বিরুদ্ধে সরব হতে দেখা গিয়েছে দলেরই অন্য অংশকে। একের পর এক পুরভোট, উপনির্বাচনে হারের পর সেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আরও বড় চেহারা নিয়েছে। এবার যেমন উলুবেড়িয়ায় শুভেন্দু অধিকারীর কর্মসূচি নিয়ে দলের মধ্যেই দ্বিমত! দলের একটা বড় অংশের বিরোধিতার জেরে তাই আজ, বুধবার উলুবেড়িয়ায় পুলিশ সুপার অভিযান কর্মসূচি বাতিল করতে বাধ্য হলেন শুভেন্দু। দলীয় সূত্রে এমনই খবর।
আজ পুলিশ সুপারের অফিস অভিযান কর্মসূচির ডাক দিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা। ২১ জুলাই উলুবেড়িয়ার সভা বাতিল ঘোষণা করে আজকে কর্মসূচি নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু দলের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয় পুলিশ সুপার অভিযান হবে না। বিজেপি নেতাদের দাবি, আগামীকাল, ২৮ জুলাই এসএসসি ইস্যুতে কলকাতায় দলের মিছিল রয়েছে। তাই আজ উলুবেড়িয়ার কর্মসূচি বাতিল করা হয়েছে। কিন্তু দলের অন্দরের খবর অবশ্য অন্য। দলীয় সূত্রের খবর, একতরফাভাবে উলুবেড়িয়ার কর্মসূচি নিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। গত ২১ জুলাইও উলুবেড়িয়ায় জনসভার ডাক দিয়েছিলেন শুভেন্দু নিজেই। তৃণমূলের শহিদ দিবস হওয়ায় সেই সভায় মত ছিল না রাজ্য বিজেপির একাধিক শীর্ষ নেতাদের। কিন্তু দলের বড় অংশের অমত সত্ত্বেও শুভেন্দু ২১ জুলাই সভা করার পক্ষে অনড় ছিলেন।
এই সভার বিষয়টা আদালত পর্যন্ত গড়ায়। শর্তসাপেক্ষে হাই কোর্ট রাত আটটার সময় উলুবেড়িয়ায় সভার অনুমতি দিয়েছিল। কিন্তু শর্ত পছন্দ না হওয়ায় উলুবেড়িয়ার সভা থেকে পিছু হঠেন বিরোধী দলনেতা। রাজনৈতিক মহলের মতে, লোক হবে না বলেই সভা বাতিল করে দেন শুভেন্দু। এভাবে দলের মুখ পোড়ায় ক্ষুব্ধ হন বিজেপির একাধিক নেতা। এরপরই ২১ জুলাইয়ের সভার বদলে ২৭ জুলাই এসপির অফিস অভিযানের ডাক দেন বিরোধী দলনেতা। কিন্তু রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ও অমিতাভ চক্রবর্তীরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ২৮ জুলাই কলকাতায় মিছিল করবে রাজ্য বিজেপি। কলেজ স্কোয়্যার থেকে ধর্মতলায় গান্ধী মূর্তির নিচে এসএসসি প্রার্থীদের অনশনস্থল পর্যন্ত হতে চলা এই মিছিলে দলের সাংসদ-বিধায়করাও থাকবেন। ফলে ২৭ জুলাই উলুবেড়িয়ার কর্মসূচি চাইছিলেন না তাঁরা। রাজনৈতিক মহল ও দলের একাংশের মধ্যেও প্রশ্ন, তাহলে কি সুকান্ত-অমিতাভদের চাপেই কার্যত পিছু হঠতে হল শুভেন্দুকে?