গোতাবায়া রাজাপক্ষকে আশ্রয় দেওয়ার কারণেই মলদ্বীপ জুড়ে অশান্তি ছড়িয়েছে। জনরোষ এড়াতে বুধবার ভোরে কলম্বো ছেড়ে পালিয়েছিলেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপক্ষে। শ্রীলঙ্কার কয়েকটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছিল, ভারত মহাসাগরের দ্বীপরাষ্ট্র মলদ্বীপে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন তিনি। এরপর থেকেই গোটা মলদ্বীপ জুড়ে তুমুল বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। সূত্রের খবর, সেখানে প্রেসিডেন্টের বাসভবন ঘিরে বিক্ষোভ করছে উত্তেজিত জনতা। প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপক্ষের অবস্থান নিয়ে মলদ্বীপ সরকার গতকাল সন্ধে পর্যন্ত কিছু জানায়নি। সে দেশের প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী তথা মলদ্বীপ ন্যাশনাল পার্টির নেতা দুন্যা মামুন জানিয়েছেন, গোতাবায়া রাজাপক্ষকে আশ্রয় দেওয়ার কারণেই মলদ্বীপ জুড়ে অশান্তি ছড়িয়েছে। তুমুল বিক্ষোভ-আন্দোলন করছেন মানুষজন। প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন গ্রেফতারি সম্ভব নয়। এই সুযোগকেই হাতিয়ার করে স্ত্রী-পরিবার সহ শ্রীলঙ্কা ছেড়ে মলদ্বীপে পালিয়ে গেছেন গোটাবায়া রাজাপক্ষে। প্রথমে জানা গিয়েছিল, শ্রীলঙ্কা ছেড়ে দুবাই যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর।
পরে মলদ্বীপে গিয়ে আত্মগোপন করেন রাজাপক্ষে। সে দেশের কয়েকটি সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, মলদ্বীপেও জনরোষের মুখোমুখি হওয়ায় সপরিবার সিঙ্গাপুরে উড়ে গেছেন গোতাবায়া। শ্রীলঙ্কার শান্তিশৃঙ্খলা এখন সেনার হাতে। দেশে জরুরি অবস্থা জারি হয়েছে। তবে সেনাবাহিনীর তরফে শ্রীলঙ্কা সংসদের স্পিকারকে বলা হয়েছে, দেশের এই পরিস্থিতির রাজনৈতিক সমাধান করতে হবে। নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। গোটাবায়া দেশ ছাড়ার পরে বুধবার প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিঙ্ঘে অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন। সংবিধানের ৩৭ ধারা অনুযায়ী কার্যনির্বাহী প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি। ২০ জুলাই হবে নয়া প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। কিন্তু এতেও সমস্যার সমাধান হয়নি, উল্টে বেড়েছে। বিক্রমসিঙ্ঘের সরকারি দফতর তথা বাসভবনেও বুধবার বিকেলে হামলা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে গোতাবায়া ইস্তফা না দিলে শ্রীলঙ্কায় সাংবিধানিক সঙ্কট তৈরি হতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ।