বঙ্গ বিজেপির যেন শনির দশা চলছে! একুশের ভোটে ভরাডুবির পর থেকেই দলের অন্দরে চলছে মুষল পর্ব। সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ, হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ত্যাগ, লোকাল ট্রেন থেকে কলকাতার রাজপথে দলীয় নেতার বিরুদ্ধে পোস্টার— নানা ভাবে দলের একাংশের বিরুদ্ধে সরব হতে দেখা গিয়েছে দলেরই অন্য অংশকে। একের পর এক পুরভোট, উপনির্বাচনে হারের পর সেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আরও বড় চেহারা নিয়েছে। এবার দলের রাজ্য নেতাদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মুখ খোলার ২৪ ঘন্টার মধ্যেই বঙ্গ বিজেপির সঙ্গে সংঘাত প্রকাশ্যে চলে এল অর্জুন সিংয়ের।
বিজেপিতে যাঁদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তাঁদের অনেকেই যোগ্য নন। নেতারা ঘরে বসে ফেসবুক-হোয়াটসঅ্যাপে সংগঠন করেন বলে রবিবার সাংবাদিক বৈঠক ডেকে প্রকাশ্যে বিস্ফোরক অভিযোগ করেছিলেন রাজ্য বিজেপির সহ-সভাপতি অর্জুন সিং। সোমবার অর্জুনকে পালটা জবাব দিলেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। সুকান্তর বক্তব্য, ‘বিজেপি রাস্তাতেই আছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় নেই। বিজেপি ব্লকে ব্লকে আন্দোলন-মিছিল করছে। আমাদের দলের নির্দিষ্ট পদ্ধতি আছে। দল সেই মতোই চলছে। ওঁর (অর্জুন) সমস্যা থাকলে উচ্চনেতৃত্বকে জানাতে পারেন।’
বিজেপির রাজ্য সভাপতি বুঝিয়ে দিয়েছেন, বারাকপুরের সাংসদের আচরণে দল অসন্তুষ্ট। রবিবার দলীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বেইমানির অভিযোগ তুলে অর্জুন বলেছিলেন, ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের আগে তাঁকে হারানোর চক্রান্ত হয়েছিল। এ বিষয়ে সুকান্ত বলেন, ‘এই সমস্ত কথা না বললেই ভাল হয়। অনেক সময় আমাদের বিভ্রান্তি থাকে, মনে হয় আমাদের বিরুদ্ধে কেউ চক্রান্ত করছে। অনেক সময় এটা আবার সত্যিও হতে পারে। রাজনীতিতে এরকম হতেও পারে নাও হতে পারে।’
এখানেই শেষ নয়। অর্জুন প্রসঙ্গে সুকান্ত মজুমদার এ-ও বলেন যে, ‘২০১৪ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে বিজেপি বাংলায় বেড়েছে। বহু মানুষ দলের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। তারা অনেকেই জনপ্রতিনিধি হয়েছেন। যারা দলের নীতি-আদর্শের সঙ্গে সেইভাবে পরিচিত নয় যেভাবে পরিচিত হওয়া দরকার ছিল। স্বাভাবিকভাবেই তারা দলের নিয়মনীতি জানে না।’ নাম না করে বিজেপির রাজ্য সভাপতি অর্জুনের উদ্দেশেই বলেছেন, বিজেপির নীতি—আদর্শের সঙ্গে যাঁরা এখনও পরিচিত হতে পারেননি, তাঁদের দলেই রয়েছেন বারাকপুরের সাংসদ।