দেশে জ্বালানির আকাল। প্রায় বন্ধ পরিবহণ ব্যবস্থা। খরচ বাঁচাতে ১০-১৩ ঘণ্টা লোডশেডিং করা হচ্ছে দেশ জুড়ে। বেশ কিছুদিন ধরে এমনই ভয়াবহ অর্থনৈতিক সঙ্কটের মুখে শ্রীলঙ্কা। এমনকী সে দেশে কেজি প্রতি চাল বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকায়! একটা ডিম কিনতে গেলেও খরচ করতে হচ্ছে ৩০ টাকা। অবস্থা এমনই ভয়ঙ্কর যে আকাশ ছুঁয়েছে সমস্ত পণ্যের দামই। এমন পরিস্থিতিতে ঋণ পরিশোধ করা কোনও ভাবেই সম্ভব নয়। তাই চরম আর্থিক সঙ্কটের মাঝেই এবার নিজেকে ঋণখেলাপী বলে ঘোষণা করল শ্রীলঙ্কা। তাদের তরফে জানানো হয়েছে, বিদেশি যে ঋণগুলি তারা নিয়েছেন, তা এই মুহূর্তে পরিশোধ করা সম্ভব নয়। সম্প্রতিই সরকারের তরফে একটি বিশেষ প্যানেল তৈরি করা হয়েছিল বিদেশি ঋণ পরিশোধ ও অর্থনৈতিক সঙ্কট থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় খুঁজে বের করার জন্য।
এদিন সকালেই শ্রীলঙ্কার বিদেশমন্ত্রকের তরফে বলা হয়, ‘আইএমএফের সহায়তায় অর্থনৈতিক সমন্বয় পোগ্রামের বিচার বিশ্লেষণের পর শ্রীলঙ্কা অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের জন্য সব ধরনের ঋণের পরিশোধ করার কাজ স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে’। চিঠিতে জানানো হয়, করোনা মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধের জেরে শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বিদেশি ঋণ পরিশোধ করা কোনও ভাবেই সম্ভব নয়। উল্লেখ্য, শ্রীলঙ্কার বিদেশি ঋণের একটি বড় অংশই চীন থেকে নেওয়া। তবে সঙ্কটের মুহূর্তে পাশে থাকা তো দূরস্ত, বরং টাকা ফেরত দিতে চাপাচাপি শুরু করেছে চীন। প্রায় ৩৫০ কোটি ডলার অর্থাত্ ২৬ হাজার ৫৭৫ কোটি টাকার কাছাকাছি ফেরত দিতে বলা হয়েছে শ্রীলঙ্কাকে। এই টাকা পরিশোধের জন্য মাত্র ২ বছরের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে চীন। এরমধ্যে চলতি বছরেই আন্তর্জাতিক বাজার থেকে নেওয়া প্রায় ৫২,৪০০ কোটির ঋণ পরিশোধ করতে হবে শ্রীলঙ্কাকে।