গত দু’সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে ক্রমাগত বাড়ছে জ্বালানির দাম৷ পেট্রোল এখন ১১৫ টাকা লিটার ছাড়িয়েছে। আর ডিজেল সেঞ্চুরির পথে। এর ফলে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দামও ঊর্ধ্বমুখী৷ আকাশ ছোঁয়া মূল্যবৃদ্ধির চাপে নাজেহাল সাধারণ মানুষ। কিন্তু এই লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে এখনও নিরুত্তর মোদী সরকার। তা নিয়ে বিন্দুমাত্র চিন্তিত নয় তারা। মোদীর কথানুযায়ী, মূল্যবৃদ্ধির হাহাকার কোথায়? দেশে এখন অমৃতকাল চলছে। এটাই ভারতের সবথেকে ভালে সময়। অন্তত দলের প্রতিষ্ঠা দিবসে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সারাংশ এটাই।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ১৪ই মার্চ দেশবাসীর কাছে একটি প্রতিশ্রুতি রেখেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেছিলেন, অটলবিহারী বাজপেয়ি বা মোরারজি দেশাই যদি মূল্যবৃদ্ধি রুখতে পারেন, তাহলে আমরা কেন পারব না? তিনি বলেছিলেন, ‘আমি আশ্বাস দিচ্ছি, ক্ষমতায় এলে মূল্যবৃদ্ধিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সফল হবই।’ ২০১২ সালের মে মাসে একবার পেট্রোল-ডিজেলের দামবৃদ্ধির পর তিনি বলেছিলেন, ইউপিএ সরকার প্রমাণ দিল যে তারা ব্যর্থ। বামপন্থীদের সঙ্গে জোট বেঁধে বিজেপি সেই সময় সারা ভারত ব্যাপী বন্ধও ডেকেছিল। সেই সময় কত হয়েছিল পেট্রোলের দাম? ৭৩ টাকা ১৮ পয়সা। এক সময় মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে এতটাই চিন্তিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, আর আজ তিনি যখন ক্ষমতায় তখন সম্পূর্ণ উল্টো ছবি দেখা যাচ্ছে দেশে।
শুধু এই উদাহরণই নয়। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংকে রেলের পণ্যমাশুল বৃদ্ধি নিয়ে একই আশঙ্কা জানিয়ে একবার চিঠিও লিখেছিলেন মোদী। তখন তিনি গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী। অথচ আজ পেট্রোল-ডিজেলের দামবৃদ্ধি নিয়ে সেই মোদী কোনও হেলদোল করছেন না। বুধবারও পেট্রপণ্যের দাম বেড়েছে। জিনিসপত্রের দামও লাগামছাড়া। সাধারণ মানুষের ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। সংসদের অন্দরে ও বাইরে বিরোধী সাংসদরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছেন, এখনই সর্বদলীয় বৈঠক ডেকে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী যথারীতি নির্লিপ্ত। আশা করা হয়েছিল, বিজেপির প্রতিষ্ঠা দিবসে দেশবাসীকে আশার বাণী শোনাবেন তিনি। হয়ত দলের জন্মদিনে দেশবাসীকে এই সঙ্কট থেকে রক্ষা পাওয়ার দিশা উপহার দেবেন। কিন্তু সেরকম কোনও ঘোষণাই করলেন না মোদী।