মহম্মদ নওশাদ শেখ। বছর ৫৫- র এই ব্যক্তি পেশায় ব্যবসায়ী। পড়শি রাজ্য ঝাড়খণ্ডের দুমকা জেলার হামিদপুর গ্রামের এই বাসিন্দার নাম ক্রমে দেশের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ছে।
নিজের গ্রামের গাছতলায় দীর্ঘদিন ধরে পুজো হয়ে আসছে শ্রীকৃষ্ণের। খোলা আকাশের নীচে থাকা সেই কৃষ্ণ মূর্তি পুজোর জন্য একটি সুদৃশ্য মন্দির তৈরি করে দিয়েছেন তিনি। বাড়ি তৈরির মালমশলা বিক্রির ব্যবসায়ী নওশাদ নিজের পকেট থেকে খরচ করেছেন তিরিশ লাখ টাকা।
নওশাদ সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ভক্তদের জন্য পাকা শেড এবং মন্দিরের জন্য পাকশালাও তৈরি করে দেবেন। তাঁর কথায়, আল্লাহ সর্বত্র আছেন। মন্দির মসজিদ গির্জা সর্বত্র। গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ যেহেতু হিন্দু তাই তাদের কথা বিবেচনা করেই মন্দির গড়ে দিয়েছেন।
কর্নাটকে শিক্ষাঙ্গনে হিজাবে নিষেধাজ্ঞাকে কেন্দ্র করে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে প্রশ্নের মুখে ধর্মীয় সহিষ্ণুতা। অযোধ্যায় নির্মীয়মাণ রাম মন্দির তৈরি হচ্ছে তিরিশ বছর আগে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া বাবরি মসজিদের জায়গায়।
ওই ঘটনাও দেশে ধর্মীয় অসহিষ্ণুতার আর এক দৃষ্টান্ত বলেই বহুজনের মত। স্বভাবতই ঝাড়খণ্ডের দুমকার মুসলিম ব্যবসায়ীর হিন্দু প্রতিবেশীদের জন্য মন্দির তৈরি করে দেওয়ার উদ্যোগ ধর্মীয় সহিষ্ণুতা এবং সব ধর্মের প্রতি একাত্ম হওয়ার নজির হিসাবে প্রশংসিত হচ্ছে।
সম্প্রতি সেই মন্দিরে দেবতার মূর্তি প্রতিষ্ঠার আয়োজন হয়েছিল। গ্রামে সেদিন উৎসব লেগে যায়। দেড়শো জন ব্রাহ্মণকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল অনুষ্ঠানে।
কেন এমন উদ্যোগ নিলেন নওশাদ? তিনি জানিয়েছেন, বছর তিনেক আগে নদিয়ার মায়াপুরে বেড়াতে এসেছিলেন। তখন স্বপ্নে আদেশ পান নিজের গ্রামে মন্দির প্রতিষ্ঠা করার। গ্রামে ফিরে নেমে পড়েন মন্দির তৈরির কাজে। পুরো খরচই নিজের পকেট থেকে দিয়েছেন, প্রতিবেশীদের কাছে হাত পাতেননি।
ওই গ্রামের বাসিন্দা তাঁর বন্ধু গৌতম চট্টোপাধ্যায় জানান, গত কয়েক বছর যাবৎ বাৎসরিক উৎসবে নওশাদ গ্রামে আসা ভক্তদের জন্য অস্থায়ী ছাউনি তৈরি করে দিয়েছেন। নাম সংকীর্তনের খরচ দিয়েছেন। নজির গড়েছে এই ঘটনা।